বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টায় মেতেছিল বলে জিতল মহাজোট।
বিহার ভোটের ফলাফল খতিয়ে দেখে এমনটাই মনে করছেন বিহার রাজ্য রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা।
তাঁদের মতে, বরাবরের মতো এ বারেও বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে জাতপাতের সমীকরণ কাজ করেছে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিনই মহাজোটের নেতারা সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছিলেন সমাজের কোন কোন অংশ থেকে দলীয় প্রার্থীদের বাছা হয়েছে। পরে প্রচারের অনেকটাই জুড়ে ছিল ১৯৯০ সালের উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণের লড়াইয়ের বর্ণনা। এরই মাঝে এসে পরে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গো-মাংসের গুজবে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে খুনের অভিযোগ এবং হরিয়ানার দুই দলিত শিশুর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা। ভোটের প্রচারে ওই দু’টি ঘটনা গুরুত্ব পাওয়ায় মেরুকরণ আরও স্পষ্ট হয়ে যায়।
পড়ুন এই সংক্রান্ত আরও খবর
মোদী-রথ থামাল লালু-নীতীশ জুটি
বিহারের প্রায় ১১ কোটি মানুষের মধ্যে ১৬.৯ শতাংশ মুসলমান সম্প্রদায়ের। বিহারে মোট ভোটার প্রায় ৬ কোটি ৬৮ লক্ষ। তার মধ্যে মুসলমান সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। মেরুকরণের জেরে গোটা ভোটটাই গিয়েছে মহাজোটের দিকে।
রাজ্য রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের অনুমান, কোনও ভাবেই বিজেপি জোট এই ভোটের ভাগ পায়নি। যদি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মুসলমান ভোটও বিজেপি জোটের দিকে যেত, তা হলে নির্বাচনের ফল একেবারেই উল্টে যেত।
একই ভাবে দলিত এবং মহাদলিত সম্প্রদায়ের ভোটও বিজেপি জোটের পকেটে যায়নি। জিতন রাম মাঁঝি বা রামবিলাস পাসোয়ানরা নিজেদের দলিত সম্প্রদায়ের নেতা বলে প্রচার করলেও গোটা দলিত ও মহাদলিত সম্প্রদায়ের ভোট নীতীশ কুমারের সঙ্গেই থেকে গিয়েছে।
দলিত বা মহাদলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপির বেশ কয়েক জন নেতাও রয়েছেন। এমনকী, বিহার নির্বাচনের আগে রাজ্যপাল পদে দলিত সম্প্রদায়ের রামনাথ কোভিন্ডকে বসিয়েছিল বিজেপি। রামনাথ আগে বিজেপির তফসিলি জাতি ও উপজাতি মোর্চার জাতীয় সভাপতি ছিলেন। কিন্তু বিজেপির দলিত নেতারাও সম্প্রদায়ের ভোটকে ইভিএমে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি।
তবে লালুপ্রসাদ যাদব এই জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হওয়ার ফলে যে যাদব সম্প্রদায় লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গিয়েছিল, তাঁদের বড় অংশটাই মহাজোটের দিকে ফিরে এসেছে। বাকি সমস্ত সম্প্রদায়ের ভোটে দুই জোটই প্রায় সমান সমান অংশীদারিত্ব রেখেছে। সে কারণেই গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রায় এক কোটি পাঁচ লক্ষ ভোট পেয়েছিল। কিন্তু এ বারে তা কমে প্রায় ৯৩ লক্ষ ভোটে পৌঁছেছে। লালুপ্রসাদের দলে আরজেডির ভোটও কমে প্রায় ৭২ লক্ষ থেকে প্রায় ৭০ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে। ভোট কমেছে কংগ্রেসেরও। তবে ভোট বেড়েছে নীতীশ কুমারের দল জেডিইউয়ের। গত লোকসভা নির্বাচনে সাড়ে ৫৬ লক্ষ ভোট থেকে বেড়ে ৬৪ লক্ষে পৌঁছেছে জেডিইউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy