রাকেশ আস্থানা
দুর্নীতির মামলা ঝুলে রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাই নরেন্দ্র মোদী সরকারের পক্ষে রাকেশ আস্থানাকে এখনই সিবিআইয়ে ফেরানো মুশকিল ছিল। সেই কারণেই তাঁকে দিল্লিতে অন্য উচ্চপদে বসানো হল বলে মনে করছেন অনেকে।
সিবিআইয়ের শীর্ষ স্তরে ডিরেক্টর অলোক বর্মার সঙ্গে স্পেশ্যাল ডিরেক্টর আস্থানার বিবাদ প্রকাশ্যে আসার পরে গত ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে দু’জনকেই ছুটিতে পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। মোদীর আস্থাভাজন বলে পরিচিত আস্থানার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সিবিআইতেই এফআইআর দায়ের করিয়েছিলেন বর্মা। আস্থানা সেই এফআইআর খারিজ করতে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করলেও লাভ হয়নি। হাইকোর্ট উল্টে দ্রুত সেই তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও আস্থানাকে সিবিআইয়ের নতুন ডিরেক্টর করার উপায় ছিল না সরকারের সামনে।
গুরুত্বহীন পদে বদলি হওয়ার পরে আইপিএস থেকেই ইস্তফা দিয়েছিলেন বর্মা। সেই উদাহরণ দিয়ে একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, মোদীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটি আস্থানাকে ফিরিয়েছে বিমানবন্দর ও বিমান চলাচলের নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার শীর্ষ পদে— যা সিবিআইয়ের ডিরেক্টর পদের সমতুল্য না-হলেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
আস্থানার সঙ্গে সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর এ কে শর্মা, ডিআইজি মণীশকুমার সিন্হা এবং এসপি জয়ন্ত নায়েকনাভারেরও সিবিআইতে কাজের মেয়াদ কাটছাঁট করা হয়েছে। শর্মাকে সিআরপি-র এডিজি পদে পাঠানো হচ্ছে। সিন্হাকে পাঠানো হচ্ছে ব্যুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে। এই সিন্হাই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। শর্মা এবং সিন্হা, দু’জনেই বর্মার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
সরকারি সূত্র বলছে, নতুন সিবিআই ডিরেক্টর বাছাই করতে ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উচ্চ পর্যায়ের বাছাই কমিটির বৈঠক বসবে। তার আগে সিবিআইয়ের অন্দরমহলের জট কাটাতেই এই রদবদল। ওই বৈঠকে আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ১৭ জন আইপিএস অফিসারের নাম কর্মিবর্গ দফতরে পাঠিয়েছে। তাতে অন্যদের সঙ্গে নাম রয়েছে এনআইএ-র ডিজি ওয়াই সি মোদীর। সিবিআই ডিরেক্টর পদের অন্যতম দাবিদার এই মোদী ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি)-এর সদস্য ছিলেন। গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ডে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছিল এসআইটি।
উচ্চ পর্যায়ের কমিটির এর আগের বৈঠকেই বর্মাকে সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। তা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্ন এখনও বহাল। কমিটির সদস্য, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বৈঠকের তথ্য প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছেন। পাল্টা অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আজ বলেছেন, বর্মার পাশে দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন খড়্গে। তাই তাঁর ওই বৈঠকে যাওয়াই উচিত ছিল না। তিনি কী ভাবে বর্মার দোষ ধরতেন? জেটলির বক্তব্য, খড়্গে নিজেই পক্ষপাতিত্ব করতে গিয়ে ওই বৈঠকে হাজির বিচারপতি এ কে সিক্রির বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ তুলেছেন। যা ভিত্তিহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy