রাহুলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন করেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। ফাইল চিত্র ।
সংসদে আদানিকাণ্ড নিয়ে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ‘বিভ্রান্তিকর, অবমাননাকর এবং অশালীন’। মন্তব্য করে কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানালেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে একটি চিঠিও লিখেছেন নিশিকান্ত। সেই চিঠিতে তিনি কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে উল্লেখ করেছেন, রাহুল লোকসভায় বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করেছেন এবং কোনও বৈধ প্রমাণ ছাড়াই মোদীর বিরুদ্ধে পুঁজিবাদের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ এনেছেন।
নিশিকান্ত চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ প্রস্তাবের বিতর্কে অংশ নেওয়ার সময় রাহুল আগাম নোটিস না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু অপ্রমাণিত, অপরাধমূলক এবং মানহানিকর বিবৃতি দিয়েছিলেন। এই বিবৃতিগুলি বিভ্রান্তিকর, অবমাননাকর, অশ্লীল, অসংসদীয়, অসম্মানজনক এবং সংসদের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে।’’
তিনি যোগ করেন, “রাহুল তাঁর বিবৃতি সমর্থন করার জন্য কোনও যথাযথ নথি জমা দেননি। তিনি কেবল একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যা সংসদকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না।’’
চিঠিতে রাহুলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদনও করেছেন নিশিকান্ত। তিনি লিখেছেন, ‘‘রাহুলের আচরণ লোকসভা এবং এর সদস্যদের বিশেষ অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একই সঙ্গে তা নিম্নকক্ষের জন্যও অবমাননাকর। আমি আপনাকে (ওম বিড়লা) সংসদ অবমাননার জন্য অবিলম্বে রাহুলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমানে আর্থিক জালিয়াতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া শিল্পপতি গৌতম আদানির ছবি তুলে ধরে সংসদে সুর চড়ান রাহুল। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর সম্পর্ক জানতে চেয়েও প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ। মঙ্গলবার সংসদে বক্তৃতায় রাহুল বলেন, ‘‘মানুষ আমার কাছে জানতে চাইছেন, কী ভাবে প্রতিটি ব্যবসায় আদানিরা ঢুকে যান এবং প্রতিটিতেই ওই শিল্পগোষ্ঠী সফল হয়!’’
এ নিয়ে মোদী এবং আদানির ছবি প্রকাশ্যে এনে ওয়ানাড়ের সাংসদ বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় আদানিদের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু... এক জনই কাঁধে কাঁধ রেখে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। উনি (গৌতম) মোদীর অনুগত থেকেছেন। এবং নতুন করে গুজরাতকে সাজানোর ভাবনা মোদীর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আসল জাদুর শুরু ২০১৪ সালে। যখন মোদী দিল্লি পৌঁছে গেলেন (পড়ুন প্রধানমন্ত্রী হলেন)।’’
ধনকুবের গৌতম এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিয়ে রাহুলের এই সব মন্তব্যের পর সুর চড়ান বিজেপি সাংসদেরাও। তাঁরা অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন কংগ্রেস নিজেই টাটা, বিড়লা এবং অম্বানীদের মতো বেশ কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠীকে সমর্থন করে এসেছে। পাশাপাশি, রাহুলের দাবিকে মিথ্যা বলেও জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদরা। সেই অভিযোগ থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানালেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত।
সম্প্রতি, আদানিকাণ্ড নিয়ে উত্তাল হয়েছে সংসদ। আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে আদানিদের বিরুদ্ধে এক দশক ধরে শেয়ারে কারচুপি করার অভিযোগ এনেছে। তার পর থেকেই সেই বিষয়ে সংসদে আলোচনা করার দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy