যুগোস্লাভিয়ার গৃহযুদ্ধের উদাহরণ তুলে ধরে এ দেশে তীব্র ধর্মীয় মেরুকরণ নিয়ে সতর্ক করে দিলেন রঘুরাম রাজন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাজ রাজনের মতে, হিন্দু সংখ্যাগুরুর আধিপত্যে সংখ্যালঘুরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ফলে ঐক্যের বদলে দেশে একাধিক বিবদমান গোষ্ঠী তৈরি হয়।
একটি সাক্ষাৎকারে রঘুরামের এই মন্তব্যে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে অযোধ্যায় রামমন্দির ঘিরে মেরুকরণের চেষ্টার দিকে আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাজনের মন্তব্যে বিজেপি নীরব থাকার কৌশল নিলেও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য শমিকা রবি। গোটাটাই রাজনীতি বলে কটাক্ষ করে টুইট করেছেন তিনি।
রাজনকে সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়, তীব্র মেরুকরণের ফলে কি গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে? রাজন জবাব দেন, ‘‘আমরা যুগোস্লাভিয়ার উদাহরণ দেখেছি।’’ যুগোস্লাভিয়ায় সার্ব, ক্রোট, স্লোভেনীয়দের মধ্যে বিবাদে দশ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলেছিল। দেশটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। রাজনের বিশ্লেষণ, ‘‘হিন্দু সংখ্যাগুরুর আধিপত্য বলে মুসলমান, খ্রিস্টানরা বাদ পড়ে যান। সংখ্যাগুরুর এই আধিপত্যের বিপদ হল, ঐক্যের বদলে তা দেশকে বিবদমান গোষ্ঠীতে ভাগ করে ফেলে।’’
ওই সাক্ষাৎকার দেখেই শমিকা টুইট করেন, ‘‘অকারণ আতঙ্কপ্রবণ গৃহযুদ্ধের কথা সাংবাদিকদের থেকে আশা করা হয়। কিন্তু তাতে রঘুরাম রাজনের মৌন সম্মতি অনেকটা খোলসা করে দেয়।’’ এর সঙ্গে ‘ইট’স পলিটিক্স স্টুপিড’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মেরুকরণের সঙ্গে হিন্দু গোরক্ষক বাহিনীর বিপদ নিয়েও মুখ খুলেছেন রাজন। গোরক্ষক বাহিনীর দাপটে গোটা হিন্দি বলয়েই কৃষক বা পশুপালকদের পক্ষে গরু বিক্রি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুধ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া অথর্ব গরু নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথ স্কুলের অধ্যাপক রাজনের মতে, ‘‘ফলাফল না ভেবে পদক্ষেপের উদাহরণ এটি।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘বুড়ো গরুর দেখাশোনা করা চাষিদের কাছে দায় হয়ে ওঠে। গরু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ভারসাম্য রাখতে আরও গোশালা চাই। কিন্তু তার খরচ কে দেবে? যার উপরে খরচ চাপানোর কোনও উদ্দেশ্য ছিল না, তার উপরেই
খরচ চাপছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy