Professor murdered by pushing from running train his lover as she denied to marry him dgtl
Murder
সম্পর্কে থাকলেও বিয়েতে নারাজ ছাত্রী, ট্রেন থেকে ফেলে খুন করেন অধ্যাপক!
প্রণয়ঘটিত কারণে অপরাধের প্রতিনিয়তই কোনও না কোনও ঘটনা ঘটছে দেশের নানা প্রান্তে। প্রেমে ব্যর্থ হওয়া বা পছন্দের মানুষটিকে না পাওয়ার হতাশায় আক্রোশের বশে খুনের মতো ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে। ঠিক এমনটাই ঘটেছিল সুভাষ ও ইন্দুর মধ্যে। যেখানে শিক্ষক ও ছাত্রীর প্রেম ভয়ঙ্কর পরিণতি পেয়েছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ১৮:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
প্রণয়ঘটিত কারণে অপরাধের প্রতিনিয়তই কোনও না কোনও ঘটনা ঘটছে দেশের নানা প্রান্তে। প্রেমে ব্যর্থ হওয়া বা পছন্দের মানুষটিকে না পাওয়ার হতাশায় আক্রোশের বশে খুনের মতো ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে। ঠিক এমনটাই ঘটেছিল সুভাষ ও ইন্দুর মধ্যে। যেখানে শিক্ষক ও ছাত্রীর প্রেম ভয়ঙ্কর পরিণতি পেয়েছিল।
০২১৪
একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে করতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এক অধ্যাপক ও তাঁর অধীনে গবেষণারত এক ছাত্রীর। সালটা ২০১২। অধ্যাপকের নাম সুভাষ। তিনি কেরলের কালিকট ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি-তে সহকারী অধ্যাপকের পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর অধীনেই গবেষণা করছিলেন ইন্দু। সেখান থেকেই প্রণয়ের সূত্রপাত।
০৩১৪
সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, দু’জনে বিয়ে করার বিষয়টি পাকপাকি করে ফেলেছিলেন। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। দু’জনেই একে অপরকে নিয়ে খুব খুশি ছিলেন। কিন্তু পরিণতি যে এমন ভয়ঙ্কর হবে তা হয়তো ইন্দু ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি।
০৪১৪
২০১২-র ২৪ এপ্রিল ইন্দুকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ট্রেনের দুটো টিকিট বুক করেন সুভাষ। একটা টিকিট দিল্লি থেকে সিকিম এবং অন্য টিকিট তিরুঅনন্তপুরম থেকে কোঝিকোড় যাওয়ার টিকিট বুক করেন সুভাষ। সঙ্গে ইন্দুরও টিকিট বুক করেন।
০৫১৪
২৫ এপ্রিল তিরুঅনন্তপুরম থেকে কোঝিকোড় যাওয়ার কথা ছিল দু’জনের। সেখানে আদালতে ম্যারেজ রেজিস্ট্রি করার কথা ছিল। কিন্তু সুভাষ সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ইন্দুকে বিষয়টি জানাননি। সুভাষের পরিকল্পনা ছিল, রেজিস্ট্রি করে পর দিন ইন্দুকে নিয়ে সিকিমে হানিমুনে যাবেন।
০৬১৪
অন্য দিকে, ইন্দুর বাড়ি থেকেও পাত্র দেখা হচ্ছিল। ইন্দু তাতে সায়ও দেন। সুভাষ যেমন ইন্দুকে তাঁর পুরো পরিকল্পনার বিষয়টি সাইপ্রাইজ বলে চেপে গিয়েছিলেন, তেমনই ইন্দু তাঁর পাত্র দেখার বিষয়টি সুভাষকে জানাননি।
০৭১৪
ইন্দুর বাড়ির লোক সুভাষকে তাঁর ভাল বন্ধু হিসেবেই জানতেন। মেয়ের বিয়ে হচ্ছে, আর বন্ধুকে বলবেন না, এটা তো হতে পারে না! তাই ইন্দুর বাবা-মা তাঁকে না জানিয়েই ২৪ এপ্রিল সুভাষের বাড়িতে নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে হাজির হন। সুভাষকে সব বলেন তাঁরা। সব শুনে সুভাষ আকাশ থেকে পড়েন। এটা কী করে সম্ভব? ইন্দু কেন এ কথা লুকিয়ে গেল?
০৮১৪
সুভাষ তাও নিজের মনকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, হয়তো চাপের কাছেই নতিস্বীকার করেছে ইন্দু। তাই ২৫ এপ্রিল ইন্দুর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন সুভাষ। টিকিট বুক করাই ছিল। তিরুঅনন্তপুরমে দু’জনে দেখা করেন। তার পর ট্রেনে কোঝিকোড়ের উদ্দেশে রওনা হন। ট্রেনে ইন্দুকে নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন সুভাষ। কিন্তু কোনও লাভই হয়নি।
০৯১৪
ট্রেনের মধ্যেই সুভাষের উপর চেঁচামেচি শুরু করে দেন ইন্দু। সুভাষের সঙ্গে যে সম্পর্ক রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়, জানিয়ে দেন তা-ও। অন্য যাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে এ কথা বলে ট্রেনের দরজার সামনে ইন্দুকে ডেকে নেন সুভাষ। সেখানেও তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এ বারও লাভ হয়নি।
১০১৪
রাত তখন ২টো। ট্রেন পেরিয়ার নদীর উপর আলুভার সেতুর কাছে পৌঁছতেই সুভাষ ইন্দুকে ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। ট্রেন যে হেতু স্লো ছিল, ইন্দু সেতুর একটি পাইপে ধাক্কা খেয়ে নদীতে পড়ে যান।
১১১৪
দু’দিন পর ইন্দুর দেহ পেরিয়ার নদী থেকে উদ্ধার হয়। নদীর ধারে কাজ করছিলেন কয়েক জন। তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ আত্মহত্যার মামলা রুজু করে। কিন্তু ইন্দুর বাবার এই মৃত্যুতে সন্দেহ হয়।
১২১৪
পুনরায় তদন্তের জন্য কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। তদন্ত ফের শুরু হয়। সুভাষকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। সুভাষ এ দিকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আগে থেকেই বলেছিলেন তাঁর সঙ্গে ইন্দু ছিল। কিন্তু নিজের বিয়ে নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিল সে। ট্রেনে দু’জনেই ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুম থেকে উঠে ইন্দুকে দেখতে পাননি।
১৩১৪
তদন্তকারীরা তখন সুভাষের টিকিট বুকিং, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে সব কিছু খতিয়ে দেখেন। তখন বিষয়টি সামনে আসে। অন্য দিকে, নদীর ধারে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে তদন্তকারীরা জনতে পারেন ইন্দু যখন নীচে পড়ে যাচ্ছিলেন সে সময় দরজার পিছনে কাউকে একটা দেখা যায়। সেই থেকে সন্দেহ দানা বাঁধে সুভাষের উপর।