তেত্রিশ বছর আগে স্বর্ণমন্দিরে খলিস্তানি জঙ্গিদের নিকেশ করতে ঢুকেছিল সেনা। সেই অপারেশন ব্লুস্টারের বার্ষিকীতে স্বর্ণমন্দিরেই ফের শোনা গেল খলিস্তানের স্লোগান।
বেশ কিছু দিন ধরেই পঞ্জাবে খলিস্তানি জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-ই খলিস্তানি আন্দোলনে ফের হাওয়া দিতে চাইছে। এ নিয়ে পঞ্জাব সরকারকে একটি বার্তাও পাঠিয়েছে কেন্দ্র। মঙ্গলবার ‘অপারেশন ব্লুস্টারের’ ৩৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে অমৃতসরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। মোতায়েন ছিল ১৫ কোম্পানি আধাসেনা। স্বর্ণমন্দির চত্বরে হাজির ছিলেন সাদা পোশাকের পুলিশ ও শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। তার মধ্যেই স্বর্ণমন্দিরের সর্বোচ্চ ধর্মীয় আসন অকাল তখ্ত-এ জাঠেদার (প্রধান উপাসক) জ্ঞানী গুরবচন সিংহ প্রথামাফিক বক্তৃতা দিতে শুরু করার পরেই খলিস্তানের পক্ষে স্লোগান দেন কট্টরপন্থী শিরোমণি অকালি দল (অমৃতসর)-এর সদস্যরা। এ দিনই অমৃতসরে বন্ধও ডেকেছিল আর এক কট্টরপন্থী সংগঠন ডাল খালসা। সব মিলিয়ে পঞ্জাব ফের
অশান্ত হতে পারে মনে করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জেনেছে, ১৯৮৪ সালের ‘অপারেশন ব্লুস্টার’-এ নিহত খলিস্তানি নেতা জার্নেল সিংহ ভিন্দ্রেনওয়ালের ভাইপো লখবির রোড়ে এখন পাকিস্তানে সক্রিয় রয়েছে। লখবিরের নেতৃত্বাধীন ‘খলিস্তান ইন্টারন্যাশনাল শিখ ইউথ ফেডারেশন’ (আইএসওয়াইএফ) পঞ্জাবের বিভিন্ন প্রান্তে হামলা চালানোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, গত মাসের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানের কর্তারপুর সাহিবে একটি বৈঠক করে লখবির। সেখানে জন্মসূত্রে ভারতীয় দুই জঙ্গির হাতে গ্রেনেড তুলে দিয়ে পঞ্জাবের বিভিন্ন প্রান্তে হামলা চালানোর জন্য নির্দেশ দেয় সে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই ওই জঙ্গিদের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের পরিকল্পনা রয়েছে। তাই বিশেষ ভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বিএসএফকেও। এরই মধ্যে গত রবিবার পঞ্জাবের নওয়ানসহর থেকে গ্রেফতার হয় তিন জঙ্গি। তাদের কাছ থেকে দু’টি পিস্তল ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে লখবিরের কথায় পঞ্জাবে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা।
অন্য দিকে শিখদের একাধিক সংগঠনের মধ্যে মতান্তর অনেক দিন ধরেই বাড়ছে। জ্ঞানী গুরবচন সিংহকে অকাল তখ্ত-এর প্রধান উপাসক হিসেবে মানে শিরোমণি অকালি দল। কিন্তু শিরোমণি অকালি দল (অমৃতসর) তাঁকে পছন্দ করে না। শিখদের দ্বিবার্ষিক ধর্মীয় জমায়েত বা সরবত খালসার সংগঠনের পক্ষ থেকেও গুরবচনকে সরানোর দাবি উঠেছিল। ফলে এ দিন গুরবচন বক্তৃতা শুরু করতেই সিমরানজিৎ সিংহ মান-এর নেতৃত্বে শিরোমণি অকালি দল (অমৃতসর) স্লোগান দিতে শুরু করে। তখনই ‘খলিস্তান জিন্দাবাদ’ আওয়াজও ওঠে। পরে অকাল তখতের নীচে বসে আলাদা বক্তৃতা দেন ‘সরবত খালসা’র মনোনীত ‘সমান্তরাল’ জাঠেদার ধ্যান সিংহ মান।
ধ্যান সিংহের দাবি, আজ গুরবচনের বদলে স্বর্ণমন্দিরের প্রধান পুরোহিত বক্তৃতা দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিল শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা প্রকাশ সিংহ বাদল এবং তাঁর ছেলে সুখবীর সিংহ বাদল চাপ দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছেন। গুরবচনকে এখনই জাঠেদারের পদ থেকে সরানোর দাবি করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy