ফাইল চিত্র।
প্রয়াগের কুম্ভে একসঙ্গে ডুব দেবেন দাদা-বোন। লখনউয়ে একসঙ্গে রোড-শো, সাংবাদিক বৈঠক, জনসভা। ফেব্রুয়ারি মাসে বোন প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশে ঝড় তুলতে চান রাহুল গাঁধী। সে জন্যই এখন তোড়জোড় তুঙ্গে কংগ্রেস শিবিরে।
অমেঠীর পথে প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে আজ ফের বলেছেন রাহুল। তাঁর মন্তব্য, ‘‘উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকার তৈরি করতেই প্রিয়ঙ্কাকে আনা হয়েছে।’’ কিন্তু সে তো তিন বছর পরের কথা। সামনের লোকসভা ভোটের জন্যও ‘মিশন-৩০’ নিয়ে এগোচ্ছেন রাহুল। উত্তরপ্রদেশে সব আসনে প্রার্থী দিলেও মোটের উপর ৩০টি আসনে ভাল করে লড়তে চাইছে কংগ্রেস। এর মধ্যে ১০-১৫ টি আসনে থাকবে সবথেকে বেশি জোর, যেখানে গত লোকসভায় প্রবল মোদী ঝড়েও কংগ্রেস লাখখানেক ভোট পেয়েছে। আর সেগুলি নিয়েই এখন সমাজবাদী পার্টি-বিএসপির সঙ্গে দর কষাকষি করতে চাইছেন রাহুল। বিশেষ করে ‘অনড়’ মায়াবতীর সঙ্গে।
গত কালই রাহুল জানিয়েছিলেন, তিনি উত্তরপ্রদেশে ব্যাকফুটে খেলবেন না। বরং মায়াবতী-অখিলেশ যদি কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করতে চান, তাতে আপত্তি নেই। রাহুলের এই মনোভাব বুঝেই মায়াবতী লখনউয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অখিলেশও দলে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে আপসের ইঙ্গিত দেননি কোনও নেতাই।
রাহুলের সুর ধরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বর বলেন, ‘‘কংগ্রেস ২০০৯ সালের থেকে ভাল ফল করবে উত্তরপ্রদেশে। সে বার কংগ্রেস ২১টি লোকসভা আসন পেয়েছিল। তবে এ বার সমাজবাদী পার্টি আর বিএসপি কংগ্রেসকে জোটের বাইরে রেখে ভুল করেছে।’’ অনেকেই মনে করছেন, প্রিয়ঙ্কাকে পূর্ব উত্তরপ্রদেশ আর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে পশ্চিমের ভার দিয়ে রাহুল শহরের ভোটার, যুবক আর উচ্চবর্ণের তাস খেলতে চাইছেন। যেটি মূলত বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির এক নেতা আজ স্বীকার করেন, রাহুল যে ভাবে আক্রমণাত্মক হচ্ছেন, তাতে বেছে বেছে উচ্চবর্ণরাই কংগ্রেসকে ভোট দেবেন, সমাজবাদী পার্টি-বিএসপি-র ভোটব্যাঙ্ক ভাঙবে না, তা তো হয় না। ত্রিমুখী লড়াই হলে আখেরে
লাভ বিজেপিরই।
বিজেপি সেটি অস্বীকারও করছে না। তাদের বক্তব্য, মায়াবতী প্রধানমন্ত্রী হতে চান। ফলে রাহুল উত্তরপ্রদেশে সক্রিয় হন, তা চাইবেন না বিএসপি নেত্রী। কিন্তু কংগ্রেস বলছে, তাদের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নে অখিলেশ নমনীয় হলেও মায়াবতী অনড়। তাঁকেও বুঝতে হবে, সমঝোতা না হলে ক্ষতি তাঁরও। অন্তত ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হতে পারে। ২০০৯-এ কংগ্রেসের ২১ টি আসনের মধ্যে ১৫ টিই এসেছিল পূর্ব প্রান্ত থেকে। যে কারণে প্রিয়ঙ্কাকে সেখানে পাঠিয়ে জোর দিচ্ছেন রাহুল।
কংগ্রেস সূত্রের মতে, যে সব আসনে দল জোর দিয়ে লড়বে, সেগুলি হল বরেলী, লখনউ, জালাউন, ঝাঁসি, হামিরপুর, কুশীনগর, উন্নাও, কানপুর, প্রতাপগড়, ফারুকাবাদ, ধাউরারা, খেরি, সহরানপুর, গাজ়িয়াবাদ, রামপুর। সহারানপুরে কংগ্রেসের ইমরান মাসুদ চার লক্ষের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। সমাজবাদী পার্টি-বিএসপি মিলিয়েও ৩ লক্ষের বেশি ভোট হয়নি। গাজ়িয়াবাদে প্রায় ২ লক্ষ, রামপুরে দেড় লক্ষ ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস।
প্রিয়ঙ্কাকে বারাণসী থেকে প্রার্থী করার দাবিও উঠেছে। সেখানকার কংগ্রেস নেতা অজয় রাই বলেন, ‘‘আমরা প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করার জন্য তৈরি।’’ তবে এ নিয়ে এখনই কোনও ইঙ্গিত দেয়নি এআইসিসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy