বিজেপি তথা সঙ্ঘই মূল শত্রু। কিন্তু তাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে কেন জোট হতে পারে না, তা বোঝাতে ‘পার্টি কর্মসূচি’ তুলে আনলেন কংগ্রেস-প্রশ্নে অনড় প্রকাশ কারাট।
এপ্রিলের পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হল, সিপিএম এমন কোনও রাজনৈতিক লাইন নিতে পারে না, যাতে কংগ্রেসকে ‘যুক্তফ্রন্ট’-এর শরিক বা সহযোগী হিসেবে ভাবা সম্ভব।
এই প্রস্তাব মোটেই সীতারাম ইয়েচুরি বা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতাদের সমর্থনপুষ্ট নয়। ইয়েচুরির রাজনৈতিক লাইনকে সংখ্যার জোরে হারিয়ে দেওয়া কারাট ও তাঁর অনুগামীদের খসড়া প্রস্তাবে কংগ্রেস-বিরোধিতারই প্রতিফলন। প্রস্তাব বলছে, সিপিএম কখনওই বড় বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধিতা থেকে সরতে পারে না। জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ও বিজেপি, দু’টিই বুর্জোয়া দল। আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গেও জাতীয় স্তরে কোনও সমঝোতার সুযোগ নেই। তবে রাজ্য স্তরে কোন দলের কী অবস্থান, তা দেখে কৌশল ঠিক হবে।
কেরল এবং ত্রিপুরায় ‘ঠেকে শিখে’ কংগ্রেস-বিজেপি থেকে সমদূরত্বের তত্ত্ব ছেড়েছে কারাট-শিবির! তাদের কাছে এখন বিজেপিই মূল বিপদ।
আলিমুদ্দিনের নেতারা এখনও মনে করছেন, বিজেপি ও তৃণমূলের জোড়া বিপদ এড়াতে বাঁচার রাস্তা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট। রাজ্যের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে সেই পথ খুলে রাখা হয়েছে। তাঁরা পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত এই যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে চান।
ইয়েচুরি চেয়েছিলেন, বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস বা আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে গোপন আঁতাঁতের রাস্তা খুলে রাখতে। সেই মতামতকে জায়গা দিয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত রাজনৈতিক কৌশল নেওয়া হবে। অর্থাৎ, রাজস্থান বা ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যের ভোটে যে সব আসনে সিপিএম প্রার্থী দেবে না, সেখানে সবথেকে শক্তিশালী অ-বিজেপি প্রার্থী বা কংগ্রেসের ঝুলিতেই যাবে সিপিএমের ভোট। নিচুতলায় সেই নির্দেশ পৌঁছবে। যদিও এতে আলিমুদ্দিনের লাভ হবে না। কারণ, সিপিএম নেতারা সদস্যদের বলতে পারবেন না যে, বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে ভোট দিন!
বাংলার নেতাদের একটি মতকে স্বীকৃতি দিয়েছেন কারাটরা। তা হল, দুষ্টু ‘ক্যাডার’-এর চেয়ে শূন্য ‘পার্টি’ ভাল। সংগঠনকে চাঙ্গা করার দাওয়াই হিসেবে বলা হয়েছে, পার্টির সদস্যদের মান উন্নত করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy