‘পিএম-কিসান’ প্রকল্পে বাজেটে অনুদান নিয়ে রাহুলকে খোঁচা মোদী-জেটলির। —ফাইল চিত্র
ভোটের মুখে প্রান্তিক কৃষকদের কাছে টানতে বছরে ৬০০০ টাকা অনুদান ঘোষণা হয়েছে। সেই হিসাবে মাসে দাঁড়ায় ৫০০ টাকা। আর দিনপ্রতি ১৭ টাকার মতো। বছরের অনুদানকে দৈনিকে ভাগ করে বিরোধীরা হাসি-মস্করা করেছেন। সহজ পাটিগণিতের অঙ্কই ঘুরিয়ে দেখানোয় অনুদান ঘোষণা করেও কার্যত ব্যুমেরাং হওয়ার উপক্রম বিজেপির কাছে। হাওয়া ঘোরাতে এ বার পাল্টা রাহুলকে কটাক্ষ বিদ্রুপ শুরু করল গেরুয়া শিবির। দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর বিদেশে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাহুলকে কার্যত ‘বাচ্চা ছেলে’ বলে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন জেটলি। মোদীর তোপ, ‘কৃষকের কাছে ৬০০০ টাকার কত মূল্য সেটা এসি ঘরে থেকে বোঝা যাবে না।’
বাজেট পেশ করার কথা ছিল তাঁরই। কিন্তু কিডনির চিকিৎসার জন্য বেশ কিছুদিন আগেই আমেরিকায় গিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তার পর থেকেই অর্থ মন্ত্রকের ভার সামলাচ্ছেন পীযূষ গয়াল। বাজেটও পেশ করেছেন তিনিই। ১ ফেব্রুয়ারি সেই অন্তবর্তী বাজেটেই ঘোষণা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি প্রকল্প’ বা ‘পিএম-কিসান’ প্রকল্পে ২ হেক্টরের কম জমির মালিকদের বছরে ৬০০০ টাকা অনুদান দেবে সরকার। প্রায় ১২ কোটি প্রান্তিক পরিবার এতে উপকৃত হবে, দাবি করেন গয়াল।
কিন্তু বাজেট বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরই কংগ্রেস সভাপতি হিসেবটা ঘুরিয়ে পেশ করেন। পাটিগণিতের সহজ নিয়মে ওই ৬০০০ টাকাই বছরের পরিবর্তে প্রতিদিনের হিসেব কষে দিনে ১৭ টাকার ছক বের করেন। কৃষকদের সঙ্গে উপহাস করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে এ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ, শ্লেষ ছুড়ে দেন মোদী ব্রিগেডের দিকে। এ নিয়ে সরব হয় অন্য বিরোধীরাও।
আরও পড়ুন: অমিতের পর যোগীর কপ্টারও নামতে দিল না রাজ্য সরকার
এই পরিস্থিতিতে আজ রবিবার লেহ্ সফরে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘কৃষকদের জন্য যুগান্তকারী এই ‘পিএম-কিসান’ প্রকল্প। দিল্লিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে এর গুরুত্ব বুঝতে পারবেন না। প্রান্তিক চাষিদের কাছে ৬০০০ টাকার প্রয়োজনীয়তা বুঝতেই পারবেন না তাঁরা।’’ বলা বাহুল্য, মোদীর নিশানায় ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, বিরোধীদের এই প্রচারে ভোটের হাওয়া ঘুরে যেতে পারে। অনুদান ঘোষণা করেও সেটা ব্যুমেরাং হতে পারে এই সম্ভাবনার আঁচ করেই এ দিন পাল্টা মুখ খোলেন মোদী-জেটলি। নিউ ইয়র্কে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেটলি বলেন, ‘‘এটা প্রথম বছর। সরকারের রাজকোষে আয় বাড়লেই এই অনুদান আরও বাড়ানো যেতে পারে।’’ রাহুল যে এই অনুদানকে হাসাহাসির পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন, তার জবাবে রাহুলের নাম না করে জেটলি বলেন, ‘‘(রাহুলের) মাথায় রাখা দরকার, উনি লোকসভা ভোটে লড়ছেন। কোনও কলেজের নির্বাচনে নয়। ওঁর আরও পরিণত হওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: আগে দিল্লি থেকে মোদীকে তাড়ান, তার পর এখান থেকে মমতাকে, ব্রিগেডে ডাক বামেদের
প্রান্তিক কৃষকদের জন্য একশো দিনের কাজ, নাম মাত্র দামে খাদ্যসামগ্রী, বিনামূল্যে চিকিৎসা, বিদ্যুৎ, গ্যাসের ব্যবস্থা রয়েছে। সেই বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে জেটলি বোঝাতে চেয়েছেন, এত সুবিধার সঙ্গে এই ৬০০০ টাকার নগদ আর্থিক সাহায্য চাষিদের কাছে অনেক মূল্যবান। আবার সরকারের আয় বাড়লে এই সাহায্য আরও বাড়তে পারে। তা ছাড়া রাজ্য সরকারগুলিও এর সঙ্গে নিজেরা অনুদান জুড়ে চাষিদের আর্থিক সাহায্য আরও বাড়াতে পারে।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy