মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝিকে কি সরিয়ে দেবেন নীতীশ কুমার এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে রাজ্য-রাজনীতির অলিগলিতে। এ জল্পনা উস্কে দিয়েছেন খোদ জিতনরামও। কয়েক দিন আগে তিনি বলেন, “দলের চাপে সময়ের আগেই হয়তো আমাকে সরে যেতে হবে।” আপাতত মুখ খোলেননি নীতীশ। আজ তিনি শুধু বলেছেন, “২৯ নভেম্বরের পরই যা বলার বলব।”
মহাদলিত সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রীকে তড়িঘড়ি কি সরাবেন নীতীশ? জেডিইউ নেতাদের একাংশ বলছেন, জিতনরাম মাঝেমধ্যে যে রকম মন্তব্য করে বিতর্ক ছড়াচ্ছেন, তাতে এখনই তাঁকে না সরালে দলের আরও ক্ষতি হবে। জেডিইউয়ের সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী স্পষ্টই বলছেন, “সাধারণ মানের এক নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসিয়েছেন নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রী উল্টে দলেরই ক্ষতি করছেন। এটা বেশি দিন সহ্য করা যায় না।” তাহলে কী ক্ষমতা হারাচ্ছেন জিতনরাম? ত্যাগীর জবাব, “নীতীশ কুমার এখন সম্পর্ক যাত্রায় বেরিয়েছেন। ৩০ নভেম্বর তিনি দিল্লি যেতে পারেন। তার পরই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” দলীয় সূত্রের খবর, ২৯ নভেম্বর নীতীশের সম্পর্ক যাত্রা শেষ হবে।
মাসছয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জিতনরাম। তার পর থেকেই প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে হরেক মন্তব্য করে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক ছড়িয়েছেন। কখনও পশ্চিম চম্পারণে আদিবাসীদের জমায়েতে বলেছেন, “উচ্চশ্রেণির লোকেরা বহিরাগত। আদিবাসীরাই দেশের আদিম বাসিন্দা।” কখনও বলেন, “গরিবদের চিকিৎসায় অবহেলা করলে চিকিৎসকদের হাত কেটে নেওয়া হবে।” কয়েক দিন আগে তিনি মন্তব্য করেন, “বিহারের উন্নয়নের জন্য দিল্লির কাছ থেকে টাকা জোগাড় করতে না পারলে রাজ্যের ৭ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এখানে ঢুকতে দেব না।”
এ সবে অস্বস্তি বেড়েছে নীতীশ, জেডিইউয়ের। দলের একটি বড় অংশ জিতনরামকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তাঁরা বলছেন, নীতীশই ফের রাজ্যের দায়িত্ব নিন। ওই দাবি নিয়ে শরদ যাদবের সঙ্গেও দেখা করেছেন বিহারের কয়েক জন জেডিইউ বিধায়ক। জিতনরামকে নিয়ে চাপে পড়েছেন নীতীশও। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতি যে তৈরি হতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি। লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দিনই বিহারে দলের ভরাডুবির দায় স্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন নীতীশ। বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে মহাদলিত জিতনরামকে তাঁর উত্তরসূরি করেন। কিন্তু ছ’মাসের মধ্যেই নীতীশকে নতুন বিপত্তিতে ফেললেন খোদ জিতনরাম। এ নিয়ে গত রাতে দলীয় সভাপতি শরদ যাদবের সঙ্গে নিজের বাসভবনে প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন নীতীশ। বৈঠকের পর অবশ্য কোনও নেতাই মন্তব্য করতে চাননি।
জেডিইউ সূত্রের খবর, জিতনরামকে এ সব মন্তব্য না করতে পরামর্শ দিয়েছেন শরদ যাদব, কে সি ত্যাগী ও রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠনারায়ণ সিংহরা। কিন্তু তাতেও দমেননি মুখ্যমন্ত্রী। উল্টে প্রকাশ্যে বলেছেন, “কারও পরামর্শ চাই না। অন্যদের থেকে আমি কম কিছু জানি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy