শনিবারই নীতীশের সঙ্গে দেখা করেছিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। রবিবার বিহারিবাবু গেলেন লালুপ্রসাদের কাছে। পটনার মিলার হাইস্কুলের মাঠে। ছবি: পিটিআই।
তিন দিনে দু’বার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পৌঁছে গেলেন জোটসঙ্গীর বাড়িতে! আর তাতেই রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে বিহারের রাজনীতিতে।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের বাড়িতে গিয়েছিলেন জেডিইউ-প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তার পরে গত কাল মুজফ্ফরপুরে সভা করে লালু-নীতীশ দু’জনকেই বিঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সেই সভার পরে ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই ফের লালুর বাড়িতে গেলেন নীতীশ। দলীয় সূত্রের খবর, আসন্ন বিহার ভোটে নির্বাচনী রণকৌশল নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে।
আগামী ৯ অগস্ট ফের বিহারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন তিনি গয়ায় সভাও করবেন। এই অবস্থায় পাল্টা কৌশল হিসেবে ১ অগস্ট দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। সেখানে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী সরকারকে নিশানা করবেন। এ দিন লালুর বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় নীতীশকে এই ঘনঘন আসা নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। নীতীশ বলেন, ‘‘সামনেই ভোট। আমরা জোট বেঁধে ভোটে লড়ছি। তাই এই আসা-যাওয়া চলবেই।’’
সরকারি ভাবে জোট হলেও লালু-নীতীশের মধ্যে সমীকরণ কিন্তু মসৃণ ভাবে চলছিল না বেশ কিছু দিন ধরেই। এই পরিস্থিতিতে দুই প্রবীণ নেতার মধ্যের দূরত্ব কমাতে আসরে নামেন শরদ যাদব। তার পরেই পরিস্থিতি বদলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আজই পটনায় এক সভায় চিরাচরিত ভঙ্গিতে মোদীকে বিঁধেছেন লালু। মোদীকে ‘কালীয় নাগ’ হিসেবে চিহ্নিত করে লালু বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী নিজেই তো কালীয় নাগ!’’
গত কাল বিহারের মুজফ্ফরপুরের সভায় মোদী শ্রীকৃষ্ণের কালীয় দমনের উল্লেখ করে বিরোধী শিবিরকে বিঁধতে চেয়েছিলেন। আজ তার জবাবে লালু রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে জানিয়ে দেন, বিহারে তিনি কিছুতেই বিজেপিকে সরকার গড়তে দেবেন না। এ দিন সকালে টমটমে চেপে পটনার গাঁধী ময়দানে হাজির হন লালু। জাতিগত জনগণনার তথ্য প্রকাশের দাবিতে সেখানে ধর্নায় বসেন তিনি। ওই দাবিতে আগামী কাল বিহার বন্ধও ডেকেছে আরজেডি। এ দিন লালুর ধর্নায় কিছু ক্ষণের জন্য হাজির হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন জেডিইউ নেতা শরদ যাদবও। নৈতিক ভাবে তিনি বন্ধকে সমর্থনও জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে লালুর বক্তব্যে তেলে-বেগুনে চটেছেন প্রদেশ বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি সঞ্জয় ময়ূখ বলেন, ‘‘লালুপ্রসাদ নিজের মেয়ের বিয়েতে মোদীজিকে নিমন্ত্রণ করেন। সেই ছবি ফেসবুক-টুইটারে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছেন বলে গর্বও করেন। কিন্তু সব ভুলে জনসভায় তাঁর বিরুদ্ধেই অসম্মানসূচক মন্তব্য করেন!’’
গত রাতে নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকের পর এ দিন পটনার মিলার হাইস্কুলের মাঠে প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী মহাসম্মেলনে লালুর সঙ্গে এক মঞ্চে হাজির হন শত্রুঘ্ন সিন্হা। পাশপাশি বসে দু’জনকে কথা বলতে দেখা যায়। শত্রুঘ্ন পরে বলেন, ‘‘আমার প্রথম এবং শেষ দল বিজেপি। আমাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy