সে দিন: পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচনে বিজয় রূপাণী ও নিতিন পটেল। গাঁধীনগরে। —ফাইল চিত্র।
নিজের রাজ্য নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় নরেন্দ্র মোদী।
মাত্র তিন দিনের মাথাতেই গুজরাতে বিজেপি সরকার সঙ্কটের মুখে পড়েছে। দফতর বণ্টন নিয়ে ক্ষুব্ধ উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তিন দিনের মধ্যে তাঁকে অর্থ, নগরোন্নয়ন ও পেট্রোলিয়াম দফতরের দায়িত্ব দিতে হবে। এত দিন ওই সব দফতর তিনি সামলে এসেছেন। না হলে তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে আপাতত দল থেকে পদত্যাগ করবেন না।
পরিস্থিতি সামলাতে সোমবারই গাঁধীনগর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে অমিত শাহকে। কারণ বিজেপির অন্তর্কলহের ফায়দা নিতে মাঠে নেমে পড়েছেন পাতিদার আন্দোলনের নেতা হার্দিক পটেল। তিনি বলেছেন, ‘‘উনি ১০ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপি ছাড়ুন। কংগ্রেসে যাতে ওঁকে উপযুক্ত পদ দিয়ে নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে আমি কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলব।’’ নিতিন জানিয়েছেন, তিনি হার্দিকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি।
হার্দিকের এই চালেই রক্তচাপ বেড়েছে মোদী-শাহের। কারণ ১৮২টি আসনের গুজরাত বিধানসভায় মাত্র ৯৯টি আসনে জিতেছে বিজেপি। সত্যিই যদি ১০ জন বিজেপি বিধায়ক দল ছেড়ে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে আসেন, তা হলে সরকার উল্টে যাবে। কংগ্রেসেরও হিসেব, নিতিন বিজেপি ছাড়লে সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। আসন কমলেও গুজরাতের ভোটে জয় নিয়ে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ এত দিন উল্লসিত ছিলেন। দু’জনেরই এতে মুখ পুড়বে।
বিজেপির একটা বড় অংশের মত, মোদী-অমিত শাহ পরিস্থিতি সামলে নেবেন। কিন্তু সরকার বাঁচলেও গুজরাতের গদিতে যে মোদীর রাশ আলগা হচ্ছে, তা স্পষ্ট। নিজের ক্ষোভ নিয়ে রাখঢাক করেননি নিতিন। দফতরে গিয়ে দায়িত্ব নেননি। সরকারি গাড়িও ব্যবহার করছেন না। ক্ষোভের কথা নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকেও জানিয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতি ও শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের স্থান-কাল নিয়েও দিনভর টালবাহানা চলে। আজ অমদাবাদে একটি পুষ্প প্রদর্শনীতে গিয়েছিলেন রূপাণী।
কিন্তু অনুষ্ঠানের মাঝপথেই মঞ্চ ছেড়ে দশ মিনিট মোবাইলে কথা বলতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।
নিতিন স্পষ্টই বলেন, ‘‘নিজের দফতর ফেরত চাওয়ায় ভুল কিছু নেই। কম গুরুত্বপূর্ণ দফতর নিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী থেকে কী লাভ? আমি অপমানিত। তা সঠিক লোককে জানিয়ে দিয়েছি।’’
নিতিনও হার্দিকের মতোই পাতিদার। তিনি কড়ভা পটেল সম্প্রদায়ের নেতা। নিতিনের বিধানসভা কেন্দ্র, মেহসানাই ছিল পাতিদার আন্দোলনের গড়। সংরক্ষণের দাবিতে হার্দিকের আন্দোলনের সময়ে নিতিনের বাড়িতে ভাঙচুরও হয়েছিল। তাও মেহসানা আসন থেকে জিতে এসেছেন নিতিন। বিজেপির পাশে যে পাতিদাররা রয়েছেন, তা বোঝাতে এতদিন নিতিনকেই কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। আজ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন লালজি পটেলের মতো পাতিদার সংগঠনের নেতারা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলের মতো বিজেপি নেতারা তাঁর পক্ষে মুখ খুলেছেন।
মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার ছিলেন নিতিন। এ বার আবার অর্থ দফতর তাঁর হাত থেকে নিয়ে দেওয়া হয়েছে অম্বানীদের আত্মীয় সৌরভ পটেলকে। নগরোন্নয়ন, পেট্রোলিয়াম রূপাণীর হাতেই রয়েছে। অনেকের মতে, রূপাণীই নিতিনের ডানা ছাঁটছেন। কিন্তু বিজেপি সূত্রের মতে, দফতর বণ্টন করেছেন মোদী-শাহ। রূপাণী নিমিত্তমাত্র। রূপাণী বলেছেন, ‘‘নিতিনভাইই সরকারের দ্বিতীয় ব্যক্তি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy