চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজনাথ সিংহ। ছবি: টুইটার থেকে।
লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) চিনা ফৌজের আক্রমণাত্মক আচরণকে দায়ী করেছেন। পাশাপাশি, চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেংহির সঙ্গে শুক্রবার রাতের বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমেই ‘স্থায়ী শান্তি’র পথ খোঁজার কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। শনিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে কয়েকটি টুইট করে আনুষ্ঠানিক ভাবে মস্কোর মেট্রোপোল হোটেলের এই বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে।
একটি টুইটে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এলএসি-তে পুরোপুরি শান্তি ফেরানোর জন্য কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।’’
টুইটে দাবি করা হয়েছে, ‘‘বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনা এলএসি-তে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনও রকম আপস করা হবে না।’’ যদিও একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম আজ জানিয়েছে, লাদাখ সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার জন্য ভারতীয় সেনার প্ররোচনামূলক পদক্ষেপই দায়ী বলে বৈঠকে রাজনাথ সিংহকে জানিয়েছেন ওয়েই। চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘চিন তার এক ইঞ্চি জমিও হারাবে না।’’
Raksha Mantri conveyed that the two sides should continue their discussions, including through diplomatic and military channels, to ensure complete disengagement and de-escalation and full restoration of peace and tranquillity along the LAC at the earliest.
— रक्षा मंत्री कार्यालय/ RMO India (@DefenceMinIndia) September 5, 2020
সাংহাই কো-অপারেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের রাশিয়া সফরে গিয়ে গতকাল ওয়েইয়ের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পার্শ্ববৈঠক করেন রাজনাথ। প্রথমে মস্কোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু এর পর দু’পক্ষই আলোচনায় সম্মত হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, বৈঠকে রাজনাথ শান্তি ফেরাতে লাদাখে এলএসি থেকে ‘পুরোপুরি সেনা পিছনো’ ( টোটাল ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র প্রস্তাব দেন। কিন্তু চিনের তরফে প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে ‘স্থিতাবস্থা’ ফেরানোর বিষয়টি নিয়েই আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: প্যাংগংয়ে চিনা সেনার বিপুল সমাবেশ, তবে ভারতই সুবিধাজনক অবস্থানে
সেনা সূত্রের খবর, ৩০ অগস্টের পর থেকে প্যাংগং লেকের দক্ষিণে সবক'টি উঁচু এলাকাই এখন ভারতীয় ফৌজের ঘাঁটি। চুশুলের অদূরে থাকুং সেনাঘাঁটির অদূরে হেলমেট এলাকা থেকে রেচিন লা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা থেকে চিনা ফৌজের গতিবিধির উপর নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কালা টপ, মুকপরী এবং রেজাংলাতেও ভারতীয় ফৌজ ঘাঁটি গেড়েছে। ফলে প্যাংগংয়ের দক্ষিণে স্পাংগুর হ্রদ লাগোয়া উপত্যকায় মোতায়েন চিনা বাহিনীও চলে এসেছে ‘নাগালে’। ফলে অস্বস্তিতে পড়েছে চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি। অতীতে কখনোই কালা টপ বা হেলমেটের মতো ‘স্ট্র্যাটেজিক্যাল পয়েন্টে’ ভারতীয় উপস্থিতি দেখা যায়নি। পরিস্থিতির ‘গুরুত্ব’ আঁচ করে চিন তাই ওই দুই পাহাড় লাগোয়া নীচু অঞ্চলে ট্যাঙ্ক বাহিনী মোতায়েন করেছে।
আরও পড়ুন: ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে’, বলছেন সেনাপ্রধান
গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-য় দুই বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই-র বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে কিছু এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান থেকে পিছু হটে ‘বাফার জোন’ তৈরি করেছে দুই বাহিনী। কিন্তু পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ (হট স্প্রিং), গোগরার পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৭, দেপসাং উপত্যকা এবং প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার এরিয়া-৮ থেকে ৪ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এখনও মোতায়েন রয়েছে লাল ফৌজ। কিন্তু মে মাসের আগে ওই এলাকাগুলিতে ভারতীয় সেনা নিয়মিত টহল দিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy