Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National News

বিয়ে করতে হিন্দু হয়েছিলেন মুসলিম যুবক, কিন্তু স্ত্রী ফিরলেন বাপের ঘরেই

তরুণী আদালতে বলেন, তিনি নিজের ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু এখন আর স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। মা-বাবার সঙ্গেই থাকতে চান। কোনও মানসিক চাপ নয়, বরং স্বেচ্ছায় ও স্বাধীন ভাবে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ১১:৩৩
Share: Save:

হিন্দু তরুণীকে বিয়ে করে স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম থেকে হিন্দু হয়েছিলেন। মুসলিম নাম ছেড়ে নিয়েছিলেন হিন্দু নামও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই স্ত্রী-ই আদালতে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে জানিয়ে দিলেন, স্বামী নয়, মা-বাবার সঙ্গেই থাকতে চান। এমনই এক ব্যতিক্রমী মামলায় শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চও জানিয়ে দিল, সাবালক তরুণীর ইচ্ছাই শেষ কথা। ধোপে টিকল না স্বামীর আবেদন।

ঘটনা ছত্তীসগঢ়ের রাইপুরের। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৩৩ বছরের মুসলিম যুবক ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন বছর তেইশের হিন্দু তরুণীকে। বিয়ের পরই মুসলিম নাম পরিবর্তন করে হয়েছিলেন আরিয়ান আর্য। সংসারও চলছিল ঠিকাঠাকই। কিন্তু গত ১৭ অগস্ট ওই যুবকই সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দাখিল করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, স্ত্রীকে আলাদা করার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠন চাপ সৃষ্টি করছে। তাই আদালত যেন তাঁর বক্তব্য শোনে।

মামলার শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ গঠিত হয়। অভিযোগকারীর আইনজীবী নিখিল নায়ারের বক্তব্য শোনার পর ২৭ অগস্ট ওই তরুণীকে আদালতে হাজির করার জন্য জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। সেই মতো সোমবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতিদের সামনে হাজির করা হয় ওই তরুণীকে।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট কৈফিয়ত চায় সিবিআই প্রধানের

সোমবারের শুনানিতে হাজির ছিলেন ছত্তীসগঢ়ের অ্যাডভোকেট জেনারেল যুগলকিশোর গিলডা। তিনি বলেন, বিয়েটাই অবৈধ। কারণ ওই যুবক আগেও দু’বার বিয়ে করেছেন এবং বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় বিয়ের সময় আগের দু’টি বিয়ের কথা পুরোপুরি চেপে গিয়েছেন। যদিও বিচারপতিরা সেই যুক্তি মানতে চাননি।

কিন্তু বিচারপতিদের সামনে নিজের মতামত জানাতে উঠে সবাইকে চমকে দেন তরুণী নিজেই। তিনি বলেন, তিনি নিজের ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু এখন আর স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। মা-বাবার সঙ্গেই থাকতে চান। কোনও মানসিক চাপ নয়, বরং স্বেচ্ছায় ও স্বাধীন ভাবে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিচারপতিরা ফের জিজ্ঞাসা করলে আবারও একই কথা বলেন তরুণী।

আরও পড়ুন: দুর্নীতি প্রমাণিত হলেই বাতিল হবে হাসপাতালের লাইসেন্স

অভিযোগকারী যুবক আরিয়ানের আইনজীবী যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন, পরিবারের চাপেই তরুণী একথা বলছেন। তাঁর উপর মানসিক চাপ রয়েছে। ফলে স্বাধীন ভাবে নিজের মনের কথা বলতে পারছেন না তরুণী।

কিন্তু প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ‘‘ওই তরুণী প্রাপ্তবয়স্ক। তাই তাঁকে স্বাধীন ভাবে বাঁচার অধিকার দেওয়া উচিত। যদি তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে না চান, তাহলে সেটা বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা। তার জন্য উপযুক্ত আদালতে মামলা হতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Hindu Muslim Marriage Seperation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE