Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ

ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই, বলছেন রামাইয়া

পাকিস্তান নিয়ে মন্তব্যের জন্য তিনি কারও কাছে ক্ষমাপ্রার্থী নন বলে আজ সাফ জানিয়ে দিলেন কর্নাটকের অভিনেত্রী এবং কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ রামাইয়া।

রামাইয়া

রামাইয়া

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১১
Share: Save:

পাকিস্তান নিয়ে মন্তব্যের জন্য তিনি কারও কাছে ক্ষমাপ্রার্থী নন বলে আজ সাফ জানিয়ে দিলেন কর্নাটকের অভিনেত্রী এবং কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ রামাইয়া।

সম্প্রতি সার্কের একটি প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে পাকিস্তান ঘুরে এসেছেন তিনি। দেশে ফেরার পরে একটি সভায় রামাইয়া বলেছিলেন, ‘‘পাকিস্তান কোনও নরক নয়। ওখানকার মানুষও আমাদের মতোই। ওঁরা আমাদের সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করেছেন।’’ কিন্তু তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা শুরু হয়েছে। রামাইয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা ঠুকেছেন কর্নাটকেরই এক আইনজীবী কে ভি গৌড়়া। যার শুনানি ২৭ অগস্ট। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাঁকে নিয়ে চলছে জোর বিতর্ক। বিজেপি এবং এবিভিপি কর্মীরা তাঁর মন্তব্যকে ‘ভারত-বিরোধী’ দাবি করে প্রতিবাদ শুরু করেছেন।

কিন্তু আজ বেঙ্গালুরুতে সব সমালোচনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের এই তরুণী সদস্যা বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি মাথা নোয়াতে নারাজ। রামাইয়া আজ বলেছেন, ‘‘আমি সম্মানের সঙ্গে বলছি, ‘পাকিস্তান নরকের সমান’— এমন মন্তব্যের সঙ্গে সহমত হতে পারছি না।’’ সপ্তাহখানেক আগে পাকিস্তানের সঙ্গে নরকের তুলনা টেনেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। তিনি বলেছিলেন, ‘‘পাকিস্তানে যাওয়া নরকযাত্রার সমান।’’ পর্রীকরের মন্তব্যকে বিঁধেই রামাইয়া ওই কথা বলেছেন কি না, উঠেছে সেই প্রশ্নও।

তবে ওই মন্তব্যের জন্য তাঁকে কাঠগড়ায় তোলা হবে জেনেও প্রাক্তন সাংসদ জানিয়ে দিয়েছেন, ক্ষ‌মা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। তিনি কোনও ভুল করেননি। রামাইয়ার কথায়, ‘‘কোনও অহংবোধ থেকে আমি এ কথা বলিনি। অন্য কোনও ঘটনা হলে নিশ্চয়ই ক্ষমা চাইতাম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যদি ক্ষমা চাই, যে বৃহত্তর কারণে আমরা লড়াই করছি, সেটাই হারিয়ে যাবে।’’

দিব্যা স্পন্দন নামে কন্নড় এই অভিনেত্রী রামাইয়া নামেই জনপ্রিয়। কর্নাটকের মান্ড্যয় মহিলাদের একটি সভায় তাঁর মুখে পাকিস্তান সফরের অভিজ্ঞতার কথা উঠে আসে। উল্লেখ্য, ২০১৩-১৪ সালে তিনি মান্ড্যরই সাংসদ ছিলেন।

মান্ড্যয় ওই কথা বলার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ ওঠায় রামাইয়া বলেন, ‘‘এই তো আমাদের দেশের অবস্থা। কেউ নিজের মতপ্রকাশ করলেই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হচ্ছে।’’ বিজেপি সরকার বাগ্স্বাধীনতা খর্ব করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘‘যদি পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ হয়, তা হলে প্রথম মামলাটি হওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। তিনি তো আচমকা পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বাড়িতে গিয়ে আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন!’’

বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সি টি রবির অবশ্য দাবি, এই সময়ে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান সম্পর্কে রামাইয়ার এমন মন্তব্য মোটেই কাম্য নয়। পাকিস্তান সেই সব জঙ্গিকে আশ্রয় দিচ্ছে, যারা ভারতে হামলা চালিয়েছে বা কাশ্মীরে গোলপাল পাকাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘রামাইয়া যা বলেছেন, বেশির ভাগ ভারতীয়র ভাবাবেগে আঘাত করবে।’’

কিছু দিন আগে বেঙ্গালুরুতেই এক কর্মশালায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (ইন্ডিয়া)-র বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ উঠেছিল। আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র দাবি ছিল, ওই সভায় ভারত-বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করে কর্নাটক পুলিশ। যার জেরে সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিতে হয় সংস্থার দফতর।

অন্য বিষয়গুলি:

MP-Ramya Comment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE