১০৭তম বিজ্ঞান কংগ্রেসে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
চার টোটকা —‘‘আবিষ্কার করুন, পেটেন্ট নিন, নতুন নতুন জিনিস তৈরি করুন এবং দেশকে সমৃদ্ধ করুন।’’ বেঙ্গালুরুতে ১০৭তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের অগ্রগতির জন্য তরুণ প্রজন্মকে এই ‘প্রেসক্রিপশন’ই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী ক্ষমতার যে ছবি, তাতে বদল আনার প্রয়োজনীয়তার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আশ্বাস দিয়েছেন, দেশে বিজ্ঞান-চর্চার আবহ আরও সহজ করা হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে লাল ফিতের ফাঁসে আটকাতে হয় বিজ্ঞানীদের, তার বাঁধনও হালকা করা হবে। মোদীর কথায়, ‘‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের উপরেই নির্ভর করছে ভারতের সমৃদ্ধি।’’
তবে প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াই নিয়ে নানা প্রশ্নও উঠছে। অনেকেই বলছেন, বিজ্ঞান গবেষণার জন্য যে আদর্শ কাজের পরিবেশের প্রয়োজন, ভারতে তা কদাচিৎ মেলে। আর না মেলার অন্যতম কারণ অবশ্যই সরকারি নীতি। যেমন, সম্প্রতি একটি দৈনিকে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছিল, চার বছরে ‘ইন্ডিয়া’স কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চ’ (সিএসআইআর)-এর গবেষণাগার, পুণের ন্যাশনাল কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি (এনসিএল) ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন বিজ্ঞানী। সে সময়ে বিভিন্ন কারণ শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কাছে বিজ্ঞানীদের একাংশ আক্ষেপ করেছেন, মৌলিক বিজ্ঞান-চর্চার উপরে নজর না দিয়ে ব্যবহারমূলক (অ্যাপ্লায়েড) গবেষণার উপরে জোর দিতে বলা হচ্ছে বিজ্ঞানীদের। তাতেই ক্ষুব্ধ বিজ্ঞানীরা ওই গবেষণাগার ছেড়েছিলেন। শুধু সিএসআইএর নয়, দেশের একাধিক গবেষণাগার থেকে এ ধরনের ‘অভিযোগ’ মিলেছে। আজ মোদীর মুখেও কিন্তু এক রকম ব্যবহারমূলক গবেষণার কথাই শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রয়োগ করে কিছু তৈরি করি, পেটেন্ট নিই, এবং তার পরে আমরা দেশের মানুষের জন্য তা তৈরি করি। আমি নিশ্চিত এ ভাবে এগোলে দেশের সমৃদ্ধি হবে।’’
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সিএএ আন্দোলন রুখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাঝেমধ্যেই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পরে কাশ্মীরে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা হয়েছে নেট। যদিও আজও বিজ্ঞান-মঞ্চে মোদীর মুখে শোনা গিয়েছে ডিজিটাল ইন্ডিয়া, ই-কমার্স, ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের কথা। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মৎস্যজীবীদের কাছে খারাপ আবহাওয়ার খবর ঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া বা প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে সরকারি উদ্যোগের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দুস্তানি নাগরিকে’র যন্ত্রণা শোনালেন তারিগামি
বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ উপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার মানুষ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নোবেল পুরস্কারজয়ী স্তেফান হেল এবং ইজ়রায়েলের ওয়াইজ়ম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের স্ট্রাকচারাল বায়োলজির গবেষক আদা ই ইয়োনাথ। মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান মোদী। বলেন, ‘‘গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স বা বিশ্ব উদ্ভাবনী সূচকে দেশের স্থান ৫২-তে উঠে আসার জন্য ভারতীয় বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন।’’ সেই সঙ্গে এ-ও দাবি করেছেন, গত ৫০ বছরে এত কাজ হয়নি, যা এই পাঁচ বছরে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy