Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

দিল্লির নজর যোগাযোগে, উৎসাহে প্রতীক্ষায় ঢাকা

তিস্তা না হোক। আসন্ন ঢাকা সফরে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। দু’দেশের মধ্যে পরিকাঠামোর বিকাশ ও যোগাযোগ বাড়ানোকেও এ বার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। আর মোদীর সফরের চার দিন আগেই ঢাকায় প্রস্তুতি এগোচ্ছে জোরকদমে।

কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস পরিষেবা নিয়ে সোমবার পেট্রাপোল বন্দরে বৈঠকে করেন রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস পরিষেবা নিয়ে সোমবার পেট্রাপোল বন্দরে বৈঠকে করেন রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও ঢাকা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০৩:৫৩
Share: Save:

তিস্তা না হোক। আসন্ন ঢাকা সফরে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। দু’দেশের মধ্যে পরিকাঠামোর বিকাশ ও যোগাযোগ বাড়ানোকেও এ বার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। আর মোদীর সফরের চার দিন আগেই ঢাকায় প্রস্তুতি এগোচ্ছে জোরকদমে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে মেট্রোপলিটন পুলিশকর্মী ও নিরাপত্তা কর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাঁচতারা দু’টি হোটেলের কর্মীদের জীবনবৃত্তান্তের খোঁজখবর চালানো হচ্ছে। মোদীর নিজস্ব নিরাপত্তার বাইরেও ত্রিস্তর নিরাপত্তা মোতায়েন করা হবে। ছুটি বাতিল হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকেও। আর যার জন্য এত কিছু, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের সেই ১১১টি ছিটমহলে এখন বাঁধ ভাঙা আনন্দের পরিবেশ। আর গোটা দেশের সর্বত্র এখন আলোচনা একটাই, মোদীর ঢাকা সফরে কতটা লাভ হতে পারে!

চার দিন পরে বাংলাদেশে পা রাখবেন মোদী। এর আগে কখনও ব্যক্তিগত সফরেও ঢাকায় পা রাখেননি তিনি। তাঁর সফরের আতিথেয়তার সব প্রস্তুতির দেখভাল করছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোদীর সফরের আগে এ দিন কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস পরিষেবার মহড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরে এই পরিষেবার পাশাপাশি ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস পরিষেবাও আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করা হবে। সড়কের পাশাপাশি রেল ও জলপথে আরও যোগাযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ১৯৬৫ সালের আগে যে সব রেলপথ ছিল, সেগুলি আবার নতুন করে চালানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে দু’দেশ। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান ট্রেন পরিষেবাও আরও বাড়ানো হতে পারে। পেট্রাপোল সীমান্তে এত দিন কাস্টমসের চেক-পোস্ট ছিল। সেটি এ বারে ইন্ট্রিগ্রেটেড চেকপোস্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কালই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সহমতি না হওয়ায় এই সফরে তিস্তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। ভবিষ্যতেও তাঁকে এড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। সেই হিসেবে মোদীর ঢাকা সফরে দু’দেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তিই সব থেকে বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে। পাশাপাশি, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও নিবিড় করতেও নয়াদিল্লি তৎপর হয়েছে।

বাংলাদেশকে আরও বিদ্যুৎ দেওয়া থেকে ভারতীয় শিল্পপতিরা যাতে সেখানে আরও বিনিয়োগ করতে পারেন, সে দিকে লক্ষ্য রয়েছে নয়াদিল্লির। কারণ, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ঘাটতি রয়েছে। যতটা ভারত রফতানি করে, বাংলাদেশের রফতানি সেই তুলনায় নগণ্য। বাংলাদেশের স্বার্থেই এই ঘাটতি মেটাতে চায় নয়াদিল্লি। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর যে ভাবে জঙ্গি তৎপরতা রুখতে বাংলাদেশ সচেষ্ট হয়েছে, তাতে খুশি ভারত। সেখানে পাকিস্তানের প্রভাবও আগের থেকে অনেক কমেছে বলে মনে করে মোদী সরকার।

তাই মোদীর প্রথম বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে চাইছে দিল্লি। মাত্র ৩৬ ঘন্টার সফরে বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে একটি প্রকাশ্য সমাবেশও করবেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE