নরেন্দ্র মোদী
নোটবন্দি, জিএসটি, বেকারি, অসন্তোষ, জয় শাহ, রাফাল, রাহুল গাঁধী, হার্দিক পটেল...। গুজরাত ভোটের আগে এমন হাজারো কাঁটা এক ধাক্কায় দূর করতে পুরনো ছকে ফিরছে বিজেপি।
মেরুকরণ।
গত কাল রাতে গুজরাতের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বিজেপির সদর দফতরে বৈঠকে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। পরে অমিত শাহের সঙ্গে আলাদা ভাবেও আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। অমিত ফের বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল ও আরও কিছু শীর্ষ নেতার সঙ্গে। প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি ভোটের কৌশল চূড়ান্ত করাই ছিল লক্ষ্য।
এই বৈঠকের পর দলের এক নেতা বলেন, ‘‘গুজরাতে ভোট শুরু হতে এখনও ২৩ দিন বাকি। রাহুল গাঁধী অনেক আগেই প্রচার শুরু করে সব তাস খেলে ফেলেছেন। এ বারে আসরে নামবেন মোদী। ৫ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে লাগাতার শুনানি শুরু হবে অযোধ্যা নিয়ে। গুজরাতের ভোট শুরু ৯ ডিসেম্বর। ফলে হিন্দুত্বের হাওয়ায় ঘুরে যাবে সব বিষয়।’’
বিজেপি যে মেরুকরণের রাজনীতিই করতে চাইছে, তা অজানা নয় কংগ্রেসের কাছে। দশ বছর আগে গুজরাতে ভোটের সময়ে সনিয়া গাঁধীর মুখে ‘মওত কা সওদাগর’ মন্তব্য লুফে মেরুকরণের পুরোদস্তুর ফায়দা তুলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সে কারণে এখন মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে ‘নরম হিন্দুত্ব’ করলেও সতর্ক রাহুল গাঁধী। আলটপকা কোনও মন্তব্য করে মোদীর সুযোগ করে দেননি। দলের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ বলেন, ‘‘হিন্দুত্বের জিগির তুলে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ যতই দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করুন, জনতাকে বোকা বানানো যাবে না।’’
কংগ্রেসের মতে, গুজরাত ভোটের আগে রামমন্দির নিয়ে মেরুকরণের হাওয়া তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর অযোধ্যা সফর করছেন মধ্যস্থতার জন্য। অথচ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথই বলছেন, তাঁর মধ্যস্থতায় ফল মিলবে না। তার মানে কোনও সমাধান নয়, স্রেফ রামমন্দির নিয়ে হাওয়া তোলাই বিজেপির লক্ষ্য। তাঁর সফর ঘিরে মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড বা সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড তীব্র প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। আর এই বিভাজনটাই চাইছে বিজেপি। ‘পদ্মাবতী’ ছবি নিয়ে এমনিতেই মেরুকরণের হাওয়া। আর গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে চুপ সরকার। কাশ্মীরের পুলিশও জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানকে বিঁধছে। মন্দির-মসজিদ, হিন্দু-মুসলিম, পাকিস্তান— এ সবই বিজেপির পুরনো ছক। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের একটি রিপোর্টেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধরে রাখার ব্যাপারে সব থেকে কম নম্বর জুটেছে মোদীর।
বিজেপি অবশ্য মুখে বলছে, মেরুকরণের রাজনীতি তারা করে না। প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের কথাই বলবেন প্রচারে। কিন্তু ঘরোয়া মহলে বিজেপি কবুল করছে, জাতপাতের সমীকরণ মেনে টিকিট বিলি আর মেরুকরণের আবহেই শেষ বাজারে ভোটের হাওয়া গরম করবেন প্রধানমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy