বিতর্কের আগে। কৈথালে জাতীয় সড়কের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মোদী এবং ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। ছবি: পিটিআই
এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন নরেন্দ্র মোদী। অক্টোবরেই বিধানসভা ভোট হরিয়ানায়। তাই রাস্তার শিলান্যাস করতে এসে কৌশলে বিজেপির হয়ে ভোট-প্রচারটাও সেরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী।
একই সঙ্গে অনুষ্ঠান ঘিরে রইল বিতর্কও। অত্যুৎসাহী মোদী-সমর্থকদের কারণে চূড়ান্ত অপমানিত হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা ভবিষ্যতে মোদীর সব অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন। অভিযোগ, হুডা বক্তব্য শুরু করার পরই বিজেপি সমর্থকরা ‘মোদী মোদী’ চিৎকার করে থামিয়ে দেন তাঁকে। এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হুডা বলেন, “এ ভাবে আমাকে অনুষ্ঠানের মঞ্চে বলতে না দিয়ে বিজেপি ঠিক করল না। জীবনে আর কখনও মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে উঠব না।”
নিজের রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এ ভাবে অপমানিত হওয়ার ঘটনায় কড়া নিন্দা করেছেন দিল্লি ও হরিয়ানায় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদও। তাঁর কথায়, “সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চকে রাজনীতির কাজে ব্যবহার করাটাই তো এখন বিজেপির রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোটের লড়াইয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখতে অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের ছোট করে দেখানোটাও আজকাল বিজেপি ও তাদের প্রধানমন্ত্রীর সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বার থেকে অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের এই ধরনের মঞ্চ এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।” বিজেপির তরফে অবশ্য এখনও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইউপিএ আমলে প্রস্তাবিত হরিয়ানায় জাতীয় সড়কের একটি বিশেষ অংশের আজ শিলান্যাস করেন মোদী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হুডাও। কৈথাল থেকে শুরু হয়ে হরিয়ানা-রাজস্থানের সীমান্তে গিয়ে শেষ হবে এই সড়কপথ। ১৩৯৩ কোটি টাকার এই প্রোজেক্ট আগামী ৩০ মাসেই শেষ হওয়ার কথা। প্রোজেক্টটির মধ্যে ২৩টি আন্ডারপাস এবং প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ সার্ভিস রোডও রয়েছে।
অত্যুৎসাহী সমর্থকদের উদ্দেশে মোদী আজ বলেন, “আমি গুজরাতকে যতখানি জানি, হরিয়ানাকেও ঠিক ততটাই। আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। কথা দিচ্ছি, আপনাদের সমস্ত ভালবাসা আমি সুদ-সহ ফেরত দেব। উন্নয়নের মধ্যে দিয়েই আপনাদের ভালবাসার প্রতিদান দেব।” সড়কের পাশাপাশি সব ধরনের পরিবহন ব্যবস্থার পক্ষেই আজ সওয়াল করে তিনি বলেন, “বর্ষা এলেই রাস্তায় খানাখন্দ এই চেনাজানা ছবিটা বদলাতেই হবে। টাকাগুলো সব যাচ্ছে কোথায়? ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতির উপরে উঠে শক্তিশালী দেশ গড়ার দায়িত্ব তুলে নিতে হবে নিজেদের কাঁধেই।”
পাশাপাশি, দুর্নীতিকে ‘ক্যানসারের চেয়েও ভয়াবহ’ মন্তব্য করে এ দিন দুর্নীতিমুক্ত ভারত গড়তে কড়া পদক্ষেপ করার কথাও এ দিন বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম হরিয়ানায় এলেন মোদী। হরিয়ানার দশটি লোকসভা আসনের আটটিতে জিতেছিল বিজেপি। অনুমান, বিধানসভা ভোটেও ‘ঝড়’ তুলতে প্রধানমন্ত্রী নয়, ‘প্রধান সেবক’ হিসেবেই ভাবমূর্তি তৈরি করতে চাইছেন তিনি। দলীয় সূত্রের দাবি, ভোটে আরও ভাল ফল করতে প্রয়োজনে হরিয়ানা জনহিত কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভেঙে একাও লড়তে পারে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy