এম জে আকবর
একটি সংবাদ লেখার জন্য যেমন পূর্ব প্রস্তুতি এবং সময় লাগে, আজ সকালে দেশে ফিরে সেটুকু সময় নিয়েছেন প্রাক্তন সাংবাদিক এম জে আকবর! আর তার পর একটি দীর্ঘ বিবৃতি তৈরি করে সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছেন তিনি। যার মোদ্দা বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যাঁরা এই অভিযোগ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন আকবর। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে এই ‘রটনা’-কে যুক্ত করে তিনি বলেছেন, এর মধ্যে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে।
আকবরের বিবৃতির পরে যেমন কংগ্রেস আসরে নেমেছে, তেমনই তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে মহিলা সাংবাদিক মহলে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে ট্যাগ করে সাংবাদিক স্বাতী চতুর্বেদী টুইটারে লিখেছেন, ‘কী লজ্জাজনক ভাবে আপনারা সরকার চালাচ্ছেন! আকবর পদত্যাগ করলেন না। অথচ ১৪ জন মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন’। ‘#মিটু’ আন্দোলনের পুরোভাগে থাকা সাংবাদিক সন্ধ্যা মেনন বলেছেন, ‘‘আকবরকে যৌন নির্যাতনকারী বলে যে সব মহিলা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে আছি।’’ যে সাংবাদিকেরা আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন, তাঁদের অন্যতম, হরিন্দর বাওয়েজা টুইট করেছেন, ‘গত দু’-তিন দশক ধরে যে মহিলারা এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুঝে গিয়েছেন, তাঁদের নাকি মাথায় থাকবে দেশের সাধারণ নির্বাচন! আকবরের বিবৃতি থেকেই ‘অ্যাজেন্ডা’ শব্দটা ধার করে বলতে হয়, লক্ষ্য এখন একটাই— অনেক হয়েছে, আর নয়’! সাংবাদিক বরখা দত্তের কথায়, ‘‘অবিশ্বাস্য! সরকার যদি আকবরকে বরখাস্ত না-করে, তা হলে আমাদের উচিত তাঁর সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান বয়কট করা। যে ১৪ জন কথা বলার সাহস দেখালেন, তাঁদের কিছুতেই হেরে যেতে দিতে পারি না।’’
আকবর আজ তাঁর বিবৃতিতে নাম করেছেন গাজ়ালা ওয়াহাব, প্রিয়া রামানি, সুতপা পালদের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ তোলাটা ভাইরাল জ্বরের মতো ছড়িয়ে পড়েছে একটি অংশের মধ্যে। মিথ্যার কোনও পা থাকে না কিন্তু সে বিষ বহন করে। এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ব্যাপার। আমি যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেব।’’
প্রিয়া রামানি এই প্রচার শুরু করেছিলেন বলে উল্লেখ করে আকবর বলেছেন, ‘‘তিনি আমার নাম নেননি। কেন নেননি, জানতে চাওয়ায় টুইটারে লিখেছিলেন, আমি নাকি কিছু করিনি। তা হলে তো গল্পটাই দাঁড়াচ্ছে না। অঞ্জু ভারতী নামে এক মহিলা বলেছেন, আমি সুইমিং পুলে পার্টি করছিলাম। তাজ্জব ব্যাপার হল, আমি সাঁতারই জানি না!’’ গাজ়ালা ওয়াহাবের বিস্তৃত অভিযোগের উত্তরে আকবরের বক্তব্য, যখনকার কথা বলা হচ্ছে, সেই সময়ে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের অফিসে তাঁর একটি ছোট্ট কিউবকল ছিল। প্লাইউড এবং কাচ দিয়ে ঘেরা। তার দু’ফুট দূরেই চেয়ার-টেবিলে অন্য সাংবাদিকেরা বসতেন। বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এটা বিশ্বাস করা খুবই কঠিন যে, ওইটুকু ছোট্ট ঘরে এত কিছু ঘটত এবং আশেপাশের কেউ টেরই পেতেন না। তা-ও আবার ভরা কাজের সময়ে! এই সব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy