মুম্বইয়ে বেপরোয়া বিএমডব্লিউকাণ্ডে এ বার মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠল মূল অভিযুক্ত মিহির শাহের বিরুদ্ধে। শিন্ডেসেনার নেতা রাজেশ শাহের পুত্র শনিবার রাত থেকে মুম্বইয়ের একটি পানশালায় বসে মদ্যপান করেছিলেন বলে প্রকাশিত খবরে দাবি। ওই পানশালার একটি বিলের ছবি (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি) সোমবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রবিবার ভোরবেলা মুম্বইয়ের ওরলিতে একটি বিএমডব্লিউ ধাক্কা মারে স্কুটিতে। ৪৫ বছরের এক মহিলা কাবেরী নাকভার মৃত্যু হয়। তাঁর স্বামী প্রদীপ জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কয়েক মাস আগে পুণেতে পোর্শেকাণ্ডের পর এই ঘটনা নতুন করে চর্চায় উঠে এসেছে। অভিযোগ, ঘাতক গাড়িটি শিন্ডেসেনা নেতা রাজেশ শাহের। দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন তাঁর পুত্র মিহির। এই ঘটনায় রবিবার রাতে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে রাজেশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু মিহির এখনও অধরা।
আরও পড়ুন:
ঘটনার পর থেকেই বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ মহারাষ্ট্রের এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এমনকি, মৃতার স্বামীও বলেছেন, ‘‘দোষীরা প্রভাবশালী, তাই তাঁদের শাস্তি হবে না।’’ এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে সোমবার জানিয়েছেন, ধনী হোক বা রাজনীতিক, দোষ করলে ছাড় পাবেন না কেউই। সোমবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘হিট-অ্যান্ড-রান ঘটনা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা কখনই মেনে নেওয়া যায় না যে, ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালীরা তাঁদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনে ফাঁকি দেবে। সাধারণ নাগরিকের জীবন আমাদের কাছে মূল্যবান। আমি রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি সব অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখতে। আমাদের সরকার এই সব ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর আইন এবং শাস্তির ব্যবস্থা করেছে।’’
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুর্ঘটনার পরে প্রথমেই প্রেমিকার বাড়িতে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত মিহির। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি গাড়ির চালককেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মিহিরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (জ়োন ৩) কৃষ্ণকান্ত উপাধ্যায় সোমবার বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ে গাড়িতে দু’জন ছিলেন। কে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তা এখনও তদন্তসাপেক্ষ। প্রাথমিক ভাবে আমাদের অনুমান, মিহিরই গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন।’’ তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময়ে মিহির নেশাগ্রস্ত ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জুহুর যে পানশালায় আগের রাতে তিনি গিয়েছিলেন, তাঁর মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে কৃষ্ণকান্তের দাবি ছিল, মিহির সে দিন মদ খাননি। এ বার সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল ‘পানশালার বিল’।