দু’হাজার বাদুড় নিয়ে বাস করেন ভারতের ব্যাট উওম্যান
ভারতেই রয়েছেন ব্যাট উওম্যান। তা হলে কি ক্রিস্টোফার নোলান নতুন কোনও ডার্ক নাইট সিরিজের ছবি করছেন? উঁহু। ইনি এক্কেবারে জলজ্যান্ত। গুজরাতে থাকেন এই ব্যাট উওম্যান।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ১০:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
ভারতেই রয়েছেন ব্যাট উওম্যান। তা হলে কি ক্রিস্টোফার নোলান নতুন কোনও ডার্ক নাইট সিরিজের ছবি করছেন? উঁহু। ইনি এক্কেবারে জলজ্যান্ত। গুজরাতে থাকেন ব্যাট উওম্যান।
০২১৩
ঘরের চার দেওয়াল জুড়ে ঘাঁটি গেড়ে থাকা প্রায় দেড় থেকে দু’হাজার বাদুড়ের সঙ্গে মহানন্দে ও নিশ্চিন্তে দিন কাটাচ্ছেন এক বৃদ্ধা।
০৩১৩
চামচিকেওয়ালা ঠাকুমা। গুজরাতের রাজপুর গ্রামের চুয়াত্তর বছর বয়সী শান্তাবেন প্রজাপতিকে গ্রামবাসী ডাকেন এই নামেই।
০৪১৩
১৯৯৪ সাল থেকে এই মাউস টেলড ব্যাটদের সঙ্গে বসবাস করেছন তিনি। সংবাদ সংস্থাকে তিনি বলেন, ‘‘এত বছর ওদের সঙ্গে বাস করছি। ওরা আমার পরিবারের অংশ। বাড়ির ভিতর ছেড়ে বারান্দায় রান্না, থাকা ও ঘুমোনোর ব্যবস্থা করার পর থেকে ওদের সংখ্যাবৃদ্ধি হয়েছে। বাড়ির ভিতরে খুব বেশি আসবাবপত্রও নেই।’’
০৫১৩
প্রথম দিকে চামচিকেদের বেশ ভয় পেতেন বৃদ্ধা। তবে ৪০ বছর আগে স্বামী কাঞ্জিভাইকে হারিয়ে কৃষিজমিতে কাজ করে ছেলে আর তিন মেয়েকে একা হাতে মানুষ করা শান্তার কাছে অবশ্য এই ভয় কিছুই নয় তেমন বেগ দেয়নি।
০৬১৩
তিন মেয়ে জ্যোত্স্না, চন্দ্রিকা ও কাঞ্চনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে আর একমাত্র ছেলে দীনেশ মুম্বইয়ে বসবাস শুরু করলে ফাঁকা বাড়িতে ‘চামচিকে’রাই হয়ে ওঠে তাঁর নিত্যসঙ্গী।
০৭১৩
শান্তাবেনের ছোট্ট বাড়ির একতলা ও দোতলায় একটি করে ঘর। প্রতিটি ঘরের চার দেওয়ালে বাদুড়গুলোর কলোনি। স্বভাব মতো সারা দিন ঘুমোনোর পরে, সূর্য ডুবলেই খাদ্যের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে উড়ে যায়। রাতভর খাওয়াদাওয়া সেরে ভোরবেলা তারা ফিরে আসে।
০৮১৩
এই প্রাণীগুলি বাস করার ফলে সারা বাড়িতে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়লে নিম আর কর্পূর দিয়ে তৈরি ধূপ জ্বালিয়ে রাখেন শান্তাবেন। এখন ২৪ ঘণ্টাই অবশ্য ধূপ জ্বালিয়ে রাখতে হয়।
০৯১৩
দিনে দুই বার গামলা ভর্তি করে আশ্রিতদের বিষ্ঠা আস্তাকুঁড়ে ফেলার দায়িত্বও সামলান হাসিমুখে।
১০১৩
তাঁর কথায়, “ওদের ইচ্ছে হলে নিজেরাই এ বাড়ি ছেড়ে যাবে।” আশপাশের কিছু বাড়িতেও এ সব প্রাণী থাকত। কিন্তু রাসায়নিক ছড়িয়ে বাদুড়দের তাড়িয়ে দিয়েছে ওই সব পরিবার। শান্তার সঙ্গেও নিত্য ঝামেলা হয় প্রতিবেশীদের।
১১১৩
রাজপুরা গ্রামে সরপঞ্চ বলেন, “গ্রামের বহু বাসিন্দা শান্তিবেনের বাড়িতে এই প্রাণীগুলির উত্পাত বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি তার তীব্র বিরোধিতা করেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত প্রাণীগুলিকে সরাতে নারাজ তিনি।”
১২১৩
কেরলে যে নিপা ভাইরাস থেকে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, সেই নিপা ভাইরাসের প্রধান বাহক ছিল ফলখেকো বাদুড় বা ফ্লাইং ফক্স। তবে শান্তাবেনের বা ওই এলাকার কোথাও এখনও পর্যন্ত কোনও রোগ বাসা বাঁধেনি।
১৩১৩
বৃদ্ধার এ রকম অদ্ভুত বাদুড় বা চামচিকেপ্রীতির কথা জেনে ২০১৫ সালে তাঁকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন দিল্লির এক বাসিন্দা।