গুলি চলার ঘটনার পর গ্রামে পুলিশের টহল। ছবি: সংগৃহীত।
হন্তদন্ত হয়ে থানায় ঢুকে পড়লেন এক ব্যক্তি। দরদর করে ঘামছিলেন। মুখে স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ। কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে দেখে হাতজোড় করে বললেন, “স্যর, শিগ্গিরি চলুন, ওরা যে গুলি করে এক এক জনকে মেরে ফেলছে।” আগন্তুকের মুখে এই কথা শুনে খুব একটা পাত্তা দিলেন না ওই পুলিশ আধিকারিক। ওই ব্যক্তি যখন দেখলেন, তাঁর কথা কানেই তুলছেন না পুলিশ আধিকারিক, এ বার কাকুতিমিনতি করতে শুরু করলেন। ‘‘স্যর, ওরা যে সবাইকে মেরে ফেলবে!”
কানের সামনে ঘ্যানঘ্যান করায় এ বার একটু বিরক্তই হলেন পুলিশ আধিকারিক। সটান তাঁর জবাব, “মরছে তো আমি কী করব? থানায় কোনও ফোর্স নেই। ওরা মরছে মরতে দিন।” রক্ষকের কাছ থেকে এমন উত্তর পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। শুধু তাই-ই নয়, তাঁকে থানা থেকে রীতিমতো খেদিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাইতে গিয়েছিলেন, কিন্তু এ ভাবে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে ভাবতে পারেননি ওই ব্যক্তি। তাই হতাশ হয়ে আবার গ্রামের উদ্দেশে হাঁটা লাগান।
তত ক্ষণে তাঁর পরিবারের ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের মোরেনার দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি চালানোর ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। পুলিশ সূত্রে খবর, গজেন্দ্র সিংহ এবং ধীর সিংহের মধ্যে জমি নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে বিবাদ চলছে। সেই সময় ধীর সিংহের পরিবারের দুই সদস্যকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল গজেন্দ্রর বিরুদ্ধে। তার পর থেকে গ্রামছাড়া ছিলেন তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করে। সব মিটেও গিয়েছিল।
শুক্রবার গ্রামে ফেরেন গজেন্দ্র এবং তাঁর পরিবার। তাঁরা গ্রামে ফিরতেই আবার ঝামেলা শুরু হয় দুই পরিবারের মধ্যে। অভিযোগ বীর সিংহের লোকেরা তখন বন্দুক নিয়ে এসে গজেন্দ্রর পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। একের পর গুলি চালিয়ে প্রথমে তিন মহিলাকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এই পরিস্থিতি দেখে গজেন্দ্র পরিবারের এক সদস্য সাহায্যের জন্য থানায় পৌঁছন। কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে দ্রুত গ্রামে যাওয়ার কথা বলেন। তখনই পুলিশ আধিকারিক উত্তর দেন, “লোক মরছে মরুক, আমরা কী করব!” ওই ব্যক্তি এর পর গ্রামে গিয়ে দেখেন, পরিবারের ৬ সদস্যকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন গজেন্দ্র সিংহের পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy