Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
National News

ছেলে কোথায়? সাইকেলে দেড় হাজার কিলোমিটার চষে ফেললেন বাবা

তবে থেমে থাকেননি তিনি। পুলিশ যখন বিমুখ হয়েছে, প্রশাসনের সেই দায়িত্বটা নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন সতীশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৮:০৯
Share: Save:

ছ’মাস আগে নিখোঁজ হয়েছে বছর এগারোর গডনা। যে দিন নিখোঁজ হয়েছিল সে দিনই বাবা ছুটে গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে, সাহায্যের জন্য।

না! কোনও সাহায্যই সে দিন পুলিশ করেনি। পরেও গিয়েছিলেন, কিন্তু শূন্য হাতেই ফিরতে হয় উত্তরপ্রদেশের হাতরসের কৃষক বছর আটচল্লিশের সতীশ চন্দকে।

তবে থেমে থাকেননি তিনি। পুলিশ যখন বিমুখ হয়েছে, প্রশাসনের সেই দায়িত্বটা নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন সতীশ। চির দিনের সঙ্গী নিজের সাইকেল সঙ্গে নিয়ে পথে নামেন প্রতিবন্ধী ছেলের খোঁজে। সূর্য উদয় হচ্ছে, অস্ত যাচ্ছে, দিন পেরিয়ে রাত, আবার রাত পেরিয়ে দিন— এ ভাবেই সাইকেল নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।

আরও পড়ুন: শহিদ-কন্যাকে সভা থেকে বের করে দিয়ে বিতর্কে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী

এ ভাবে চলতে চলতে কখন যেন তিনি নিজের রাজ্য পেরিয়ে চলে গিয়েছেন দিল্লি, হরিয়ানা— খেয়াল করেননি। ৫ মাস ধরে দেড় হাজার কিলোমিটার পথ সাইকেলে অতিক্রম করে ফেলেছেন সতীশ। ছেলেকে যে তাঁকে খুঁজে বের করতেই হবে!

মন অবসন্ন ঠিকই, কিন্তু এত পথও পেরিয়েও যেন কোনও ক্লান্তির ছাপ নেই তাঁর শরীরে!

যেখানে গিয়েছেন পথচলতি মানুষকে ছেলের ছবি দেখিয়ে জানতে চেয়েছেন কেউ তাঁকে দেখেছে কি না। এখনও কোনও সদুত্তর মেলেনি। তবে খুঁজে পাওয়ার আশাতেই সাইকেলের প্যাডেলে পা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রৌঢ়। আক্ষেপের সুরে বলেন, “লোকে আমাকে জিজ্ঞাসা করে কেন এমন পদক্ষেপ করলাম। কিন্তু তাঁরা বোঝে না, সন্তান হারিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা কতটা!” তিনি জানান, ২০০৫-এ মেয়ে সরিতা অসুখে ভুগে মারা যায়। ২০১১-য় মারা যায় তাঁর অন্য এক সন্তান। গত জুনে ছেলে গডনাও নিখোঁজ হয়ে যায়। শেষ সম্বলকে খুঁজতে তাই আর পিছনের দিকে তাকাননি।

আরও পড়ুন: আধার আবেদন করতেই ভারতে ইভাঙ্কা! কী বলল ইউআইডিএআই

সতীশ জানান, গত ২৪ জুন বাড়ি থেকে স্কুলের যায় গডনা। বাড়ে থেকে স্কুল এক কিলোমিটারের মধ্যেই। সন্ধে হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় স্কুলে খোঁজ নিতে যান তিনি। কিন্তু সেখানেও ছেলেকে না পেয়ে তার কয়েক জন বন্ধুর বাড়িতে যান। পথে যেতে যেতে কেউ এক জন তাঁকে বলেন গডনাকে সাসনি রেলস্টেশনে দেখা গিয়েছে। সেখানেও ছুটে যান। কিন্তু না, হদিস পাননি তার।

তার পর চার দিন ধরে খোঁজ করেন। অবশেষে ২৮ জুন পুলিশের দ্বারস্থ হন সতীশ। অভিযোগ, পুলিশ এইআইআর নিতে অস্বীকার করে। বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও কোনও কান দেয়নি পুলিশ। অগত্যা নিজেই ছেলেকে খোঁজার দায়িত্ব নিয়ে ফেলেন। বেরিয়ে পড়েন নিজের সাইকেল নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, শহর ছাড়িয়ে অন্য রাজ্যে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE