আইএস? না আইএস নয়? নাকি আইএসের ‘আদর্শে অনুপ্রাণিত’? মধ্যপ্রদেশের ট্রেনে হামলা ও উত্তরপ্রদেশে পুলিশের সঙ্গে ১২ ঘণ্টা লড়াই চালানো যুবকদের পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের শেষ পর্বের ঠিক আগে ওই যুবকদের ভারতে প্রথম হামলাকারী ‘আইএস’ সেল বলে দাবি করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। কিন্তু আজ উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদব সরকার জানিয়ে দিল, ওই যুবকদের সঙ্গে আইএসের কোনও যোগ পাওয়া যায়নি।
মধ্যপ্রদেশের জাবরি স্টেশনের কাছে ট্রেনে হামলা ঘটানোর মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট আট জনকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার হওয়া আতিক মুজফ্ফর এই সেলের ‘মাথা’ বলে দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। তাঁদের আরও দাবি, বিদেশি এক আইএস হ্যান্ডলারের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ ছিল এই জঙ্গিদের।
লখনউয়ের ঠাকুরগঞ্জের বাড়িতে এই তথাকথিত সেলেরই সদস্য সইফুল ১২ ঘণ্টা কম্যান্ডোদের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছে। তাকেও গ্রেফতার করতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় মৌলবি বা নিজের ভাই খালিদ—কারও অনুরোধেই সইফুল আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়নি। এ দিক থেকে তার আচরণ রীতিমতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গির মতোই বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। আজ ভোর তিনটের সময়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন কম্যান্ডোরা। তাঁদের দেখেই ফের গুলি ছোড়ে সইফুল। পাল্টা গুলিতে নিহত হয় সে।
গত কাল থেকেই কেন্দ্রের বিভিন্ন সূত্রে এই চক্রকে ‘আইএস সেল’ বলে দাবি করা হয়। কিন্তু আজ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি দলজিৎ চৌধুরি জানান, ধৃতদের সঙ্গে আইএসের যোগাযোগ থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে তাদের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি আইএসের প্রচারের নথি, মুখপত্র পাওয়া গিয়েছে। এরা ইন্টারনেটে আইএসের প্রচার দেখে জঙ্গি কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকতে পারে।
এই জঙ্গিদের একেবারে কাঁচা বলে ভাবতে অবশ্য অখিলেশ সরকারও রাজি নয়। লখনউ পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি-ও আজ বলেছেন, ‘‘ভুললে চলবে না এরা গত কালই মধ্যপ্রদেশে ট্রেনে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।’’
কিন্তু তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই ভারতে ‘আইএসের’ প্রথম হামলা নিয়ে কেন্দ্র যে ভাবে সরব হয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ অখিলেশ সরকার। রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, শেষ দফার ভোটের আগে আইএস নিয়ে হইচই করে বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে বলে মনে করছে তারা। অখিলেশ সরকারের দাবি, রাজ্যে জঙ্গিদের একটি চক্র সক্রিয় বলে তারা আগেই কেন্দ্রকে জানিয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা এই চক্র নিয়ে তখন বিশেষ উদ্যোগী হয়নি কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy