Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘ঘৃণার রাজনীতি দূর হটাও’

ঘৃণার রাজনীতি ছুড়ে ফেলে ‘বিবিধের মাঝে ঐক্যবদ্ধ’ ভারত গড়তে ভোটাধিকার প্রয়োগের ডাক দিলেন সারা দেশের  দু’শোরও বেশি লেখক-অধ্যাপক, বিশিষ্টজনেরা।

অরুন্ধতী রায়

অরুন্ধতী রায়

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে গত সপ্তাহে যৌথ বিবৃতি দিয়েছিলেন দক্ষিণের শতাধিক পরিচালক। এ বার ঘৃণার রাজনীতি ছুড়ে ফেলে ‘বিবিধের মাঝে ঐক্যবদ্ধ’ ভারত গড়তে ভোটাধিকার প্রয়োগের ডাক দিলেন সারা দেশের দু’শোরও বেশি লেখক-অধ্যাপক, বিশিষ্টজনেরা। এই তালিকায় রয়েছেন গিরিশ কারনাড, অরুন্ধতী রায়, অমিতাভ ঘোষ, নয়নতারা সেহগল, টিএম কৃষ্ণ, রোমিলা থাপার, কে সচ্চিদানন্দনের মতো মুখ। ইংরেজি, হিন্দি, মরাঠী, গুজরাতি, উর্দু, বাংলা, মলয়ালি, তামিল, কন্নড়, তেলুগু ভাষায় দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছন তাঁরা।

২১০ জনের সই-সহ সেই আবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘আসন্ন লোকসভা নির্বাচন আমাদের দেশকে এক সন্ধিক্ষণে এনে দাঁড় করিয়েছে। আমাদের সংবিধান দেশের প্রতিটি নাগরিককে সমানাধিকার দিয়েছে। স্বাধীনভাবে জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা, প্রার্থনা, মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে ধর্ম, সম্প্রদায়, লিঙ্গ, জাতপাত ও আঞ্চলিকতা ভেদে নাগরিকেরা গণপিটুনি, অপমান, বিভেদের শিকার হয়েছেন।’’ তাঁদের অভিযোগ, বিদ্বেষের রাজনীতি দেশকে ভেঙে দিচ্ছে। লেখক, শিল্পী, পরিচালক, সঙ্গীতশিল্পীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেন্সর করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললেই হেনস্থা করা হচ্ছে। হাস্যকর, মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোও হচ্ছে।

বর্তমান সরকারের আমলে দলিত ও সংখ্যালঘু নিগ্রহের বিষয়টিও এসেছে তাঁদের লেখায়। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা চাই, মহিলা, দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক। আমরা চাই কাজ, শিক্ষা, গবেষণা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সমান সুযোগ। সব চেয়ে বড় কথা, আমরা বৈচিত্রের মধ্যে একতা রক্ষা ও গণতন্ত্রের বিকাশ চাই।’’ তাঁদের মতে, এই পরিবর্তন আনার প্রথম পদক্ষেপই হবে, ঘৃণা ও বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা। তাঁদের আবেদন, ‘‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে ভোট দিন, বিভেদের বিরুদ্ধে ভোট দিন, হিংসার বিরুদ্ধে ভোট দিন, ভীতি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে, সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে ভোট দিন।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ছবি প্রকাশে বাধা দেওয়া হোক অথবা বিশেষ দৃশ্য বা সংলাপে কাঁচি—শিল্পের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ বারবারই উঠেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ তকমা পেয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। সরকারের বিরোধিতা করায় যুক্তিবাদী, লেখক, সমাজকর্মী, সংবাদকর্মীদের খুন পর্যন্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দাদরি-কাণ্ডে (গোরক্ষকদের গণপিটুনিতে মহম্মদ আখলাখ খুনের ঘটনা) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মৌন থাকায় তাঁর সমালোচনা করে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দেন নয়নতারা। যার ‘ফল’ ভুগতে হয়েছে তাঁকে। চলতি বছর জানুয়ারিতে মরাঠী সাহিত্য সম্মলনের উদ্বোধনের কথা ছিল নয়নতারার। তাঁকে ডাকা হলে অনুষ্ঠান পণ্ড করার হুমকি দেয় মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। ফলে তাঁর আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। কর্নাটকে কট্টরপন্থীদের খুনের হুমকির মুখে পড়েন নাট্যকার গিরিশ কারনাডও। কাশ্মীরে সেনা জিপে এক বিক্ষোভকারীকে বেধে ‘মানব ঢাল’ করে ঘোরানোর প্রতিবাদ জানিয়ে দু’বছর আগে আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন অরুন্ধতী। বিজেপি সাংসদ পরেশ রাওয়াল বলেছিলেন, ওই বিক্ষোভকারীর বদলে অরুন্ধতীকেই ঘোরানো উচিত ছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Hate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE