ছবির মুক্তি আটকাল নির্বাচন কমিশন।
সুপ্রিম কোর্ট নয়, ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’কে রুখে দিল নির্বাচন কমিশনই।
আগামিকাল মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবন অবলম্বনে তৈরি সিনেমাটির। ঠিক চব্বিশ ঘণ্টা আগে ছবির মুক্তি আটকে গেল। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ওই ছবি মুক্তি পেলে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হতে পারে। সিনেমার পাশাপাশি ‘নমো টিভি’র সম্প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারি হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছিল। কমিশন সূত্র মারফত বলা হয়েছিল, নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ থাকা পর্যন্ত মোদীর জীবনীচিত্রের মতোই ওই চ্যানেলটিরও সম্প্রচার করা যাবে না। রাতের দিকে কমিশন সূত্রে হঠাৎ জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়েছিল। জীবনীচিত্র স্থগিত করার সঙ্গে নমো টিভি-র যোগ নেই।
গত ২৮ মার্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম-পদবির আদ্যক্ষর নিয়ে ‘নমো’ বলে সম্প্রচার শুরু করে একটি চ্যানেল। যেখানে মোদীর নির্বাচনী বক্তৃতা ছাড়াও, তাঁর নির্বাচনী সফরসূচি যেমন দেখানো হচ্ছে, সম্প্রচার করা হচ্ছে পুরনো বক্তৃতাও। বেশির ভাগ ডিটিএইচ পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাই চ্যানেলটি সম্প্রচার করছে। বিরোধীদের অভিযোগ, আচরণবিধি চালু হওয়ার পরে চ্যানেলটি সম্প্রচার শুরু করেছে। চব্বিশ ঘণ্টা তারা প্রধানমন্ত্রী ও শাসক দলের সাফল্যের গুণগান করে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়াই চ্যানেলটি সম্প্রচার শুরু করেছে।
বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছিল কমিশন। সেই উত্তরের ভিত্তিতে আজ মোদী জীবনীচিত্রের সঙ্গে ওই চ্যানেলটির সম্প্রচারও স্থগিত করা হবে বলে জানা গিয়েছিল। বিরোধী অভিযোগের ভিত্তিতে দু’টি টেলি ধারাবাহিকের প্রযোজককেও কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়।
কমিশন আজ প্রথমে জানায়, আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী কোনও প্রার্থীর পক্ষে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে এমন কিছু প্রচার করা যাবে না, যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সেই প্রার্থী বা তাঁর দলের পক্ষে যায়। সেই সূত্রেই নমো টিভির সম্প্রচার আপাতত বন্ধ থাকবে বলে মনে করা হচ্ছিল।
যদিও বাস্তবে সম্প্রচার বন্ধ হয়নি। রাতে কমিশন আধিকারিকরা জানান, নির্দেশিকা বুঝতে কিছু ভুল হয়েছিল। নমো টিভিতে প্রদর্শিত রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে মিডিয়া সার্টিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং কমিটির ছাড়পত্র নিয়ে দিল্লির মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সেই ব্যাখ্যা খতিয়ে দেখছে।
এ দিকে চ্যানেল বন্ধ হচ্ছে ধরে নিয়ে বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতারা প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন আগেই। কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝা বলেন, ‘‘কমিশন নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দল খুশি। যে ভাবে শাসক দল ওই টিভি চ্যানেল খুলে বসেছিল, তা দেশের মানুষের কাছে লজ্জার।’’ বিজেপির মুখপাত্র ভি রেড্ডি বলেন, ‘‘সরকার বা দলের কাছে এটা কোনও ধাক্কা নয়। চ্যানেলটি বেসরকারি বিজ্ঞাপনী উদ্যোগ। তারা সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যকে তুলে ধরেছিল মাত্র। এর জন্য মন্ত্রকের অনুমতি লাগে না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে বিবেক ওবেরয় অভিনীত বায়োপিকের মুক্তি আটকে গিয়ে বাস্তবিকই ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। ঘরোয়া ভাবে দলের পরিকল্পনা ছিল, ওই সিনেমাকে কেন্দ্র করে দেশে মোদীর নামে হাওয়া তোলা। গত কাল সুপ্রিম কোর্ট সিনেমাটিতে স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল তারা। কিন্তু আজ তাদের আশায় জল ঢেলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছবিটি দেশের কোনও প্রেক্ষাগৃহ বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে দেখানো যাবে না। বিদেশে মুক্তি পেলে অন্য কথা। কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কারও বায়োপিক যদি কোনও প্রার্থী বা দলের স্বার্থ চরিতার্থ করে, তা হলে তা রাজনৈতিক পরিবেশ ও ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এনটিআর এবং কেসিআর-কে নিয়ে ছবিও এখন মুক্তি পাচ্ছে না।
বিরোধীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, সিদ্ধান্তটা নিতে অনেক দেরি করেছে কমিশন। যার জবাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন ছিল। সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত কমিশনের পক্ষে পদক্ষেপ করা সম্ভব ছিল না।’’ গত ১৫ মার্চ ‘ভবিষ্যতের ভূত’ নিয়ে রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিলে কোনও সিনেমাকে কোনও সরকারি সংস্থা আটকাতে পারে না। সূত্রের খবর, মোদীর জীবনীচিত্রের ব্যাপারে নিয়ে শীর্ষ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy