পথসভায় রাজনাথ সিংহের সঙ্গে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা ভোটে গাঁধীনগর থেকে লড়বেন তিনি।শনিবার সেখানে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই সাজ সাজ রব ছিল আমদাবাদ থেকে গাঁধীনগর।আয়োজিত হল গ্র্যান্ড শো। সেখানে অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিংহ-সহ বিজেপির তাবড় নেতাকে দেখা গেল। এনডিএ-র বিভিন্ন শরিক দলের নেতারাও ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও মোদী-শাহের কাঁটা হয়ে বিঁধে রইলেন একজন— লালকৃষ্ণ আডবাণী। গাঁধীনগরের বিদায়ী সাংসদ তিনি। তাঁর কাছ থেকেই এ বারে গাঁধীনগরের ‘ব্যাটন’ নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু সমারোহ থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া— কোথাও একবারের জন্যও দেখা গেল না তাঁকে।
অমিত শাহ যদিও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। আডবাণীর মতাদর্শ মেনেই এগোবেন বলে ঘোষণা করেন। তবে আডবাণীর অনুপস্থিতি নজর কেড়েছে সকলের।
সপ্তাহখানেক আগে বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় জানা যায়, গাঁধীনগর থেকে এ বার আ়ডবাণীর পরিবর্তে দাঁড়াচ্ছেন অমিত শাহ। তার পর থেকেই বিজেপি সভাপতির আগমন নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল গাঁধীনগরে। সেই মতো এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে, সকালে হুডখোলা ট্রাকের মাথায় চড়ে, আমদাবাদের নারানপুরায় সর্দার পটেলের মূর্তির পাদদেশ থেকে ঘটলোডিয়ার পতিদার চক পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার পথসভা করেন অমিত শাহ।রাজনাথ সিংহ, নীতিন গডকরীদের নিয়ে জনসভা করেন। সেখানে শাহজানান, অটলবিহারী বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আডবাণীর কেন্দ্র গাঁধীনগর। সেখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারাটা সৌভাগ্যের বিষয়। দেশের সমস্ত নির্বাচনী কেন্দ্রের মধ্যে গাঁধীনগর সবচেয়ে উন্নত। আডবাণীর মতাদর্শ মেনে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সবরকম প্রচেষ্টা তিনি করবেন বলেও জানান তিনি। শাহ বলেন, ‘‘এ বারের নির্বাচনে শুধুমাত্র একটাই লক্ষ্য, কেন্দ্রে ফের নরেন্দ্র মোদীকেই ক্ষমতায় বসানো। দ্বিতীয়বার তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিতে হবে দেশবাসীকে।’’নির্বাচনে মোদী জেতা নিয়ে তিনি নিশ্চিত বলেও দাবি করেন। সেই সঙ্গে গুজরাতের ২৬টি লোকসভা কেন্দ্রেই বিজেপিকে জয়ী করতে অনুরোধ জানান সাধারণ মানুষকে।
গাঁধীনগরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় অমিত শাহ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
আরও পড়ুন: #প্রধানমন্ত্রীহিসেবদাও: ভিডিয়ো ধারাবাহিক শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলার চেষ্টায় তৃণমূল
অমিত শাহের পথসভায় যোগ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, পীযূস গয়াল-সহ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। জনসভায় সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গডকরীও। এমনকি মোদী-শাহের বিজেপির হয়ে এ দিন সভায় ভাষণ দিতে দেখা যায় এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকেও। তিনি বলেন, ‘‘মন থেকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন বাবা। তাই বিজেপির শরিক হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলাম আমরা। বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মধ্যে মতবিরোধও হয়েছে। পরে তা মিটেও গিয়েছে। কিন্তু একে অপরকে কখনও পিছন থেকে ছুরি মারিনি আমরা। আর ভবিষ্যতেও মারব না।’’
আরও পড়ুন: গ্রামের বুকে বেঁচে আছেন রামদাস, কিন্তু বিদর্ভে এখনও নেভেনি জঠরের আগুন
২০১৭ রাজ্যসভায় গুজরাত থেকে বিজেপির সাংসদ নির্বাচিত হলেও, এই প্রথম লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন অমিত শাহ। তাও আবার গত তিন দশক ধরে বিজেপির দখলে থাকা গাঁধীনগর থেকে, যা এতদিন লালকৃষ্ণ আডবাণীর নির্বাচনী কেন্দ্র বলে পরিচিত ছিল। ১৯৯১ সালে কংগ্রেসের জিআই পটেলকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে প্রথমবার গাঁধীনগর থেকে জয়ী হয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। ১৯৯৬ সালে ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন অটলবিহারি বাজপেয়ী। ১৯৯৮ সালে ফের গাঁধীনগরে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জয়ী হন আডবাণী। তার পর ১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালেও সেখান থেকে জয়ী হন। গতবার ৪ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন তিনি।
(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy