Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

উত্তর-পূর্বে সড়ক উন্নয়নে ঋণ ৩০ কোটি ডলার

উন্নয়নের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই নীতি মেনেই আজ উত্তরবঙ্গের সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৩০ কোটি ডলার ঋণের বন্দোবস্ত করে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। পশ্চিমবঙ্গের মোট ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ দু’টি জাতীয় সড়ক তৈরিতে ওই অর্থ ব্যবহার করা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৪:০৫
Share: Save:

উন্নয়নের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই নীতি মেনেই আজ উত্তরবঙ্গের সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৩০ কোটি ডলার ঋণের বন্দোবস্ত করে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। পশ্চিমবঙ্গের মোট ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ দু’টি জাতীয় সড়ক তৈরিতে ওই অর্থ ব্যবহার করা হবে।

আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি)-র ঋণের চুক্তি সই হয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের মধ্যে দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেবে। এর ফলে এক দিকে যেমন ভারতের অন্য রাজ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির বাণিজ্যিক লেনদেন আরও বাড়বে। অন্য দিকে তেমনই চিন, মায়ানমার, তাইল্যান্ডের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গেও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি হবে।

অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ এর সবচেয়ে বেশি সুফল পাবে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষের সামনে আর্থিক উন্নতির সুযোগ তৈরি হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক আর্থিক সহযোগিতার অঙ্গ হিসেবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে লগ্নির প্রকল্প নিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি)। এই প্রকল্পে মোট ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হবে। আর তার জন্য খরচ হবে ৫০ কোটি ডলার।

প্রথম দফায় পশ্চিমবঙ্গে দু’টি জাতীয় সড়কের কাজ হবে। যার মোট দৈর্ঘ্য ১৫০ কিলোমিটার। এ ছাড়া মণিপুরে মায়ানমারের সঙ্গে সংযোগকারী ১৮০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ হবে। ২০২১ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রথম দফায় এই দু’টি প্রকল্পের জন্য খরচ হবে মোট ৪২.৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হল এডিবি। প্রকল্প রূপায়নের জন্য বাকি অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার।

চুক্তি সইয়ের পর কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের যুগ্মসচিব তরুণ বজাজ বলেন, “উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডরকে আরও উন্নত করার জন্য একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হবে। তা হলে আর্থিক বৃদ্ধির হিসেবে যে সব অঞ্চল পিছিয়ে রয়েছে, সেখানেও উন্নতি হবে। পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্য তৈরি হবে।” এডিবি-র ভারতীয় শাখার প্রধান টেরেজা খো বলেন, “সড়ক পরিকাঠামোর উন্নতি হলে ভারতের মধ্যে এবং ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির যোগাযোগ আরও নিরাপদ হবে।”

দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্যিক লেনদেনের উন্নতির জন্য শিলিগুড়ির ‘চিকেন করিডর’-কে পাখির চোখ করেছিলেন এডিবি-র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হারুহিকো কুরোদা। তিনিই বলেছিলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হল উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা। কাজেই ভারত, ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগের উন্নতি করতে হবে।” কুরোদা মনে করতেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিলিগুড়ি করিডরে লগ্নি করতে হবে। এতে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বাড়ায় আর্থিক বৃদ্ধি বাড়বে। ফলে ওই এলাকার লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষও অর্থনীতির মূল স্রোতের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পাবেন।

কুরোদার সেই মন্ত্র মেনেই এ বার এডিবি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে জোর দিচ্ছে মোদী সরকার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE