Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
মৃত্যুর পরে প্রশ্ন

পরিকাঠামো নেই, চিড়িয়াখানায় কেন পেঙ্গুইন

মুম্বইয়ের বাইকুল্লা চিড়িয়াখানায় পেঙ্গুইনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে চিড়িয়াখানার পরিকাঠামো নিয়েই। অভিযোগ, বাইরে থেকে জন্তু-জানোয়ারদের আনা হলেও তাদের রাখার মতো পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে ওই চিড়িয়াখানায়।

বাইকুল্লা চি়ড়িয়াখানায় সেই আট পেঙ্গুইন। ফেসবুকের সৌজন্যে।

বাইকুল্লা চি়ড়িয়াখানায় সেই আট পেঙ্গুইন। ফেসবুকের সৌজন্যে।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০৯
Share: Save:

মুম্বইয়ের বাইকুল্লা চিড়িয়াখানায় পেঙ্গুইনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে চিড়িয়াখানার পরিকাঠামো নিয়েই। অভিযোগ, বাইরে থেকে জন্তু-জানোয়ারদের আনা হলেও তাদের রাখার মতো পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে ওই চিড়িয়াখানায়। এমনকী নেই ন্যূনতম জরুরি মেডিক্যাল পরিষেবারও ব্যবস্থাটুকুও। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরেই ডোরি নামে ওই পেঙ্গুইনটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পশুপ্রেমী মহলের।

গত বছর জুলাই মাসে মুম্বইয়ের ওই চিড়িয়াখানায় আসে ডোরি। প্রায় দু’দশক পর পেঙ্গুইনের মতো পাখিকে ভারতের কোনও চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছিল। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ওই পেঙ্গুইনগুলোকে আনতে খরচ হয়েছিল প্রায় ২০ কোটি টাকা। চিড়িয়াখানায় আনার পর ডোরি-সহ আটটি হামবোল্ডট্‌ প্রজাতির পেঙ্গুইনকে আলাদা করে একটি ২০০ স্কোয়ার ফুট ঘরে রাখা হয়। যার মধ্যে থাকে ২ মিটার গভীর একটি ছোট জলাশয়। ১৬ ডিগ্রি থেকে ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রা রাখার জন্য সেখানে ছ’টি বাতানুকূল যন্ত্র ও ফ্রিজারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রচুর পরিমাণে ওদের মাছ খেতে দেওয়া হতো বলে চিড়িয়াখানা তরফে জানানো হয়েছে। এর পরের মাসেই পরিকল্পনা মাফিক পেঙ্গুইনদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ওই পার্কেরই একটি আবহাওয়া নিয়ন্ত্রিত তিন তলা বাড়িতে। যেখানে জায়গা প্রায় ১৮ হাজার স্কোয়ার ফুট।

চিকিৎসক জানিয়েছেন, ১৮ অক্টোবর থেকে ডোরির শরীর খারাপ হতে শুরু করে। খাওয়ায় অনীহা, এমনকী শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে ডোরির। অভিযোগ, শ্বাসকষ্ট হওয়া সত্ত্বেও ডোরির জন্য অক্সিজেনের বন্দোবস্ত করতে অনেক দেরি করেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ২২ অক্টোবর বিকেল পাঁচটা নাগাদ ডোরির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দেখে বালাজি হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়। ওই হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন মাস্ক, পাল্স মাপার যন্ত্র ও আরও বেশ কিছু যন্ত্রপাতিও ওই চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়। ২৩ অক্টোবর সকালে মারা যায় ডোরি।

যদিও চিডিয়াখানার অধিকর্তা সঞ্জয় ত্রিপাঠীর দাবি, পেঙ্গুইনদের জন্য ওই চিড়িয়াখানায় আপৎকালীন ঘর নেই বটে, তবে অসুস্থ হলে তাদের রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট ঘরের ব্যবস্থা আছে।

পাশাপাশি, ডোরির চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন সঞ্জয়বাবু। তাঁর দাবি, প্রাথমিক ভাবে নেবুলাইজার দিয়ে রাখা হয় ডোরিকে। তখন তার অক্সিজেনের দরকার ছিল না বলেই জানান তিনি। ডোরির অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলে তৎক্ষণাৎ অক্সিজেন সিলিন্ডার আনানো হয় বলেই জানিয়েছেন সঞ্জয়বাবু। তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে চিড়িয়াখানায় পেঙ্গুইনদের জন্য আইসিইউ না থাকলেও, খুব শিগগিরই তা খোলার কথা ভাবছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

এত ন্যূনতম পরিকাঠামো নিয়ে এত টাকা খরচ করে পেঙ্গুইনের মতো পাখিকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবিক তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে। পশুপ্রেমী আনন্দ শিবার কথায়, পেঙ্গুইন কেন, কোনও জন্তু জানোয়ারের জন্যই ঠিক নয় বাইকুল্লা চিড়িয়াখানা।

আগেও মেডিক্যাল পরিকাঠামোর অভাবে বহু পশুপাখিরই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে। ২০১০ থেকে ১১ সালের মধ্যে অন্তত ১৬০টি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে এই চিড়িয়াখানাটিতে।

অন্য বিষয়গুলি:

Penguin Byculla Zoo Lack of infrastructure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE