Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Fake Note

জাল নোটের করিডর ধরে অস্ত্র কারবার কলকাতা-মুঙ্গেরে, ধৃত ৮

গোয়েন্দারা যে-আঁতাতের আঁচ পাচ্ছিলেন এত দিন ধরে, তার প্রমাণ মিলল শনিবার রাতে। খাস কলকাতার বুকে জাল নোটের বিনিময়ে অস্ত্র কেনাবেচার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ল ৮ জন কুখ্যাত অস্ত্র কারবারি এবং জাল নোটের কারবারি।

উদ্ধার হওয়া বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র, জাল নোট। -নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র, জাল নোট। -নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:১৭
Share: Save:

জাল নোটের কারবারিদের সঙ্গে আঁতাত করছে বিহারের কুখ্যাত অস্ত্র চোরাচালানকারীরা। কয়েক মাস ধরেই এই তথ্য পাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। জাল নোটের করিডর দিয়ে পড়শি বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে সেই সব বেআইনি অস্ত্র।

গোয়েন্দারা যে-আঁতাতের আঁচ পাচ্ছিলেন এত দিন ধরে, তার প্রমাণ মিলল শনিবার রাতে। খাস কলকাতার বুকে জাল নোটের বিনিময়ে অস্ত্র কেনাবেচার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ল ৮ জন কুখ্যাত অস্ত্র কারবারি এবং জাল নোটের কারবারি। উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা মূল্যের জাল ভারতীয় নোট এবং ১৭টি বেআইনি অস্ত্র।

কয়েক মাস আগে জগদ্দলে একটি লাড্ডু কারখানার আড়ালে চলা বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ পায় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ওই কারখানায় হানা দিয়ে জানা গিয়েছিল মুঙ্গের থেকে অস্ত্র বানানোর কারিগরদের নিয়ে আসা হয়েছিল ওই লাড্ডু কারখানায়। সেখানে তৈরি হচ্ছিল সেভেন এবং নাইন মিলিমিটার বোরের পিস্তলের কাঠামো। তার পর সেই পিস্তলের কাঠামো চলে যেত ওই রকমেরই আরেকটি কারখানায়, যেখানে ট্রিগার এবং স্প্রিংয়ের মত বাকি যন্ত্রাংশ লাগিয়ে পূর্ণাঙ্গ পিস্তল বানানো হত। এর পর সেই পিস্তল চলে যেত মালদহে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কালিয়াচকের একটি গ্রামে। সেখানে পালিশ করিয়ে বিক্রির উপযুক্ত করা হত সেই সব পিস্তল। তার পর জাল নোটের কারবারিদের হাত ধরেই সেই অস্ত্র চলে যেত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে। গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই দেশের অপরাধীদের পাশাপাশি সেই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে যেত বাংলাদেশে সক্রিয় জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের মত জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের হাতেও।

এসটিএফ সূত্রে খবর, ওই সূত্র ধরেই একটানা নজরদারি চালানো হচ্ছিল। এর পরেই গোয়েন্দারা খবর পান মালদহের জাল নোট কারবারিরা কলকাতায় এসেছে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিদের কাছ থেকে বেআইনি অস্ত্র কিনতে। সেই তথ্য অনুযায়ী শনিবার রাতে নারকেলডাঙা এলাকায় হানা দেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন- ‘আপনার মেয়েকে অপহরণ করব, বাঁচাতে যা পারেন করুন’! হুমকি মেল পেলেন কেজরীওয়াল​

আরও পড়ুন- ছবি অস্ত্র পাচার করে! অবাক গ্রাম​

গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ে মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা রাহুল শেখ, জিয়াউল শেখ, তাহির শেখ এবং রফিকুল শেখ। এদের সঙ্গেই ছিল বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন মালিক। জেরায় জানা যায়, মুঙ্গেরের মহম্মদ নিজাম, মহম্মদ নৌশাদ, রোহিত সাহিল নামে তিন জন অস্ত্র কারবারি অস্ত্র বিক্রি করতে আসবে কলকাতায়। তাদের জন্যই অপেক্ষা করছে কালিয়াচকের চার মূর্তি রাহুল, জিয়াউল, তাহির ও রফিকুল। সেই অনুযায়ী ফাঁদ পাতেন গোয়েন্দারা। রাতেই ধরা পড়ে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিরা। তাদের কাছ থেকে ৩টি সেভেন মিলিমিটার পিস্তল, ২১ রাউন্ড গুলি এবং ১৪টি প্রায় তৈরি হওয়া পিস্তল পাওয়া যায়।

এসটিএফের এক শীর্ষ স্তরের কর্তা বলেন, “এদের পিছনে বড় চক্র রয়েছে। জাল নোটের করিডরই এখন অস্ত্র কারবারিরা ব্যবহার করছে।” ধৃতদের রবিবার আদালতে তোলা হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE