ত্রিসুরে বন্যায় আটকে পড়াদে ট্রাকে করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। —এপি
রবিবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। তবে সোমবার থেকে কমবে বৃষ্টিপাত। ফলে কেরলের বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হওয়ার আশায় প্রশাসন। এখনও অধিকাংশ জেলা বানভাসি। তবে ধীরে ধীরে জল নামতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন কেরলবাসী। চূড়ান্ত সতর্কবার্তা রেড এলার্ট তুলে নিয়ে কম পর্যায়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিছু এলাকায় ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে যানবাহন চলাচলও। সব মিলিয়ে ফলে শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ দুর্যোগের মধ্যেও কিছুটা আশার আলো দেখছে ‘ঈশ্বরের নিজের দেশ’।
রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে জে আলফোন্স জানিয়েছেন, প্রায় দশ লক্ষ ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেনা, এনডিআরএফ রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগকে বিশ্বের বৃহত্তম উদ্ধারকাজ বলে মন্তব্য করেছেন আলফোন্স। তিনি বলেন, ‘‘দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে, এখনই এমনটা বলা যাবে না।’’ শনিবারই মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছিলেন, রাতারাতি ত্রাণ শিবির যেমন বাড়ছে তেমনই ত্রাণ শিবিরে বাড়ছে দুর্গতের সংখ্যা। তিনি জানিয়েছিলেন, অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
এখনও গোটা কেরল কার্যত জলের তলায়। মৃত্যু বেড়ে সাড়ে তিনশোরও বেশি। বানভাসি ছয় লক্ষাধিক। তিন হাজার ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। শনিবারই আকাশপথে পরিস্থিতি পরিদর্শন করে ৫০০ কোটি টাকা ত্রাণের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশ-বিদেশের বহু মানুষ ও সংগঠন ত্রাণে এগিয়ে এসেছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধার ও ত্রাণকার্য। এনডিআরএফ, সেনার তিন বাহিনী কাজ করছে। আকাশপথেও চলছে উদ্ধার। নামানো হয়েছে ৩৮টি হেলিকপ্টার।
উত্তর কোচির বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। হেলিকপ্টার থেকে তোলা রয়টার্সের ছবি।
আরও পড়ুন: মাছ বেচে ট্রোল হওয়া সেই ছাত্রী কেরলের বন্যায় দিলেন দেড় লাখ
শনিবারই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, রবিবার দিনভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হবে। তবে নাগাড়ে ভারী বর্ষণ কমবে। আর সোমবার থেকে প্রায় থেমে যাবে বৃষ্টিপাত। বন্যা নিয়ন্ত্রণে খোলা তিরুঅনন্তপুরমের কন্ট্রোল রুম সূত্রে খবর, শনিবার রাত থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটাই কমেছে। রবিবারও তেমন ভারী বৃষ্টি হয়নি। সোমবার পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু এলাকা থেকে জল নামতেও শুরু করেছে।
নিশ্চিন্ত ঘুম দুই শিশুর। কোচির একটি ত্রাণ শিবিরে। ছবি: এএফপি
আরও পড়ুন: লাভ ছাড়ছেন দোকানিরা, ধর্ম-জাতপাত ভুলে ত্রাণে ঝাঁপ কেরলের
কেরলের ১৪টি জেলার মধ্যে সাতটি জেলাতেই জারি করা হয়েছিল চূড়ান্ত সতর্কতা। রবিবার এই সাত জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা ‘রেড অ্যালার্ট ’ তুলে নিয়ে কম পর্যায়ের ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। বাকি তিন জেলায় জারি রয়েছে তার চেয়েও কম ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’। ৮ অগস্ট থেকে বন্যা শুরু হওয়ার পর এই প্রথম সব জেলা থেকে রেড অ্যালার্ট তুলে নিল আবহাওয়া দফতর।
পলক্কাড়-এর নিলয়মবাটিতে ধস সরিয়ে উদ্ধার কাজ করছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। ছবি: সিআরপিএফ-এর সৌজন্যে।
তবে এখনও বহু এলাকায় বাড়ির ছাদে, উঁচু জায়গায় বহু মানুষ আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। তাঁদের কোথাও হেলিকপ্টারে, কোথাও বা স্পিড বোটে উদ্ধার করা হচ্ছে। কাজ করছে সেনার তিন বাহিনী। এ ছাড়া এনডিআরএফ, উপকূলরক্ষী বাহিনী ও দমকলের কর্মীরাও কাজ করছেন। অনেক জায়গাতেই এমন অবস্থা যে সেখানে নৌকা বা হেলিকপ্টার কোনও কিছু নিয়েই পৌঁছনো যাচ্ছে না। ফলে তাঁদের যেমন উদ্ধার করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তেমনই খাবার-পানীয় জলও পৌঁছনো যাচ্ছে না। তবে এই রকম অনেক জায়গাতেই নৌসেনার জওয়ানদের সাঁতরে দুর্গতদের উদ্ধার করে আনার ছবিও ধরা পড়েছে।
#WATCH: Wing Commander Prasanth of Garud Special Force of Indian Air Force rescues a toddler from rooftop in flood hit town of Alappuzha. #KeralaFlood (Source IAF) pic.twitter.com/wT12zszMya
— ANI (@ANI) August 19, 2018
আরও পড়ুন: দেবতা চটে যাওয়াতেই কেরলে বন্যা! বিতর্কিত মন্তব্য আরবিআই কর্তার
কোচি নৌসেনা ঘাঁটি থেকে সোমবার শুরু হচ্ছে বিমান চলাচল। এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী উড়ান সংস্থা অ্যালায়েন্স এয়ার কোচি থেকে বেঙ্গালুরু ও কোয়েম্বাটুর পর্যন্ত বিমান চালানোর কথা জানিয়েছে।অবরুদ্ধ মানুষেরা এর ফলে অন্য রাজ্যে যেতে পারবেন। সোমবারের ফ্লাইটের সূচিও দিয়ে দিয়েছেধীরে ধীরে যানবাহন চলাচলও শুরু হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। তবে সেগুলি মূলত ছোট ছোট এলাকায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। সোমবার থেকে দূরপাল্লার যাতায়াতও শুরু হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সড়ক ও আকাশপথে এই যোগাযোগ শুরু হয়ে গেলে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে গতি আসবে বলেই মনে করছে রাজ্য প্রশাসন।
#KeralaFloods2018 #OPRAHAT @IndiaCoastGuard .The Goal is Rescue-and is the major focus for the day @IndiaCoastGuard Team making their way to reach out marooned people at #Puthukkulangara Devi Temple area and rescue them to safety-regardless @DefenceMinIndia @CMOKerala @DG_PIB . pic.twitter.com/DRtE7KVuYK
— Indian Coast Guard (@IndiaCoastGuard) August 18, 2018
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy