বানভাসি কেরল।
প্রায় গোটা কেরলই চলে গিয়েছে জলের তলায়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গৃহহীন মানুষের সংখ্যা। বানভাসি কেরলে ভেসে যাওয়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌ ও বিমানবাহিনী-সহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর তিনটি ইউনিটই নেমে পড়ল পুরোদমে।
‘রেড অ্যালার্ট’ জারি হল কেরলের ১৪টি জেলায়। কেরলের ৩৫টি বাঁধ খুলে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। গত ২৪ ঘণ্টায় সমুদ্রোপকূলবর্তী রাজ্যটিতে বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন কম করে ২৫ জন। এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে কেরলে বন্যায় ৭৯ জনের মৃত্যু হল। বন্যার জন্য দক্ষিণ রেলের বহু ট্রেন বাতিল হয়ে গিয়েছে গত এক সপ্তাহে। রেলকর্তাদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে ট্রেন বাতিল হওয়ার ঘটনা আরও বাড়বে। তিরুঅনন্তপুরম-সহ কেরলের প্রায় সর্বত্রই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি ও বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা। তিরুঅনন্তপুরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মেট্রো পরিষেবাও। রাজ্যের বেশির ভাগ স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দুধ সরবরাহের মতো জরুরি পরিষেবাও। এ দিনও ভারী বৃষ্টিতে কোনও খামতি থাকেনি।
পেরিয়ার, চালাকুড়ি, আলুভা নদীর জল বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে বইছে বলে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রাজ্য প্রশাসনের। জলের চাপ নিতে না পেরে রাজ্য প্রশাসন ৩৫টি বাঁধ খুলে দিতে বাধ্য হওয়ায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছছে।
দেখুন বানভাসি কেরলের ভিডিয়ো
#WATCH Indian Air Force airlifts a person in flood affected Pathanamthitta district of Kerala pic.twitter.com/DvOY7tS740
— ANI (@ANI) August 16, 2018
কেরলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। পরে টুইটে রাহুল কেরলের বন্যা পরিস্থিতিকে ওই রাজ্যের ইতিহাসে একটি ‘বেনজির ট্র্যাজেডি’ বলেছেন। জানিয়েছেন, বানভাসিদের উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর সবক’টি ইউনিটকে তিনি আরও বেশি সংখ্যায় দ্রুত নামানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীকে।
প্রধানমন্ত্রীও জানিয়েছেন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে এ দিন সকালেই তাঁর বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। তার পর তিনি সেনাবাহিনীর সবক’টি ইউনিটকে দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে।
আরও পড়ুন- ৯৪ বছরে এমন বৃষ্টি দেখেনি কেরল, বন্যায় মৃত বেড়ে ৩৯
আরও পড়ুন- প্রবল জলস্রোতের মাঝে শিশুকে বাঁচিয়ে নায়ক কানহাইয়া
নৌবাহিনীর দক্ষিণ কম্যান্ডে প্রশিক্ষণ চলছিল। কিন্তু এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সেই প্রশিক্ষণ বন্ধ রেখে যত বেশি সংখ্যায় সম্ভব নৌবাহিনীর জওয়ানদের বানভাসি মানুষের উদ্ধারকাজে সামিল করানো হয়েছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের কার্যালয় থেকে টুইট করে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ তহবিলে অর্থ দান করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বানভাসি মানুষের উদ্ধার ও তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে কেরল সরকারের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তিনি দাবি জানিয়েছেন বলে তাঁর টুইটে লিখেছেন কংগ্রেস সভাপতি।
দলের কেরল শাখার সব কর্মী ও নেতাকে বন্যাদুর্গত মানুষের উদ্ধার ও ত্রাণে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, পেরিয়ার ও চালাকুড়ি নদীর জল বিপদসীমার আরও ওপর দিয়ে বইবে। তাই চালাকুড়ি নদীর এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধ ও আলুভা নদীর অর্ধেক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে পড়া এলাকাগুলি থেকে মানুষদের অন্যত্র দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য কেরল প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের জন্যও।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy