ভাজুভাই। —ফাইল চিত্র।
ভাজুভাই ভালা। নরেন্দ্র মোদী ২০০১-এ প্রথম বার যখন গুজরাতের বিধানসভা ভোটে লড়েন, সে সময় তাঁর জন্য নিজের আসন ছেড়ে দিয়েছিলেন। আরএসএস নেতা মোদী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর সরকারে হন অর্থমন্ত্রী। গুজরাত বিজেপির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই ভাজুভাইকে কর্নাটকের রাজ্যপাল করেছেন মোদী।
কর্নাটক ভোটের পরে এক দিকে বি এস ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বে বিজেপি, অন্য দিকে এইচ ডি কুমারাস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী করার লক্ষ্যে কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট— দুই পক্ষই সরকার গঠনের দাবি জানানোয় নজর ঘুরে গেল সেই ভাজুভাইয়ের দিকে।
বিজেপির দাবি, ‘ম্যাজিক সংখ্যা’য় পৌঁছতে না পারলেও বৃহত্তম দল হিসেবে বিজেপিকেই সরকার গড়তে ডেকে বিধানসভায় গরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ দেওয়া উচিত। উল্টো দিকে কংগ্রেসের দাবি, গোয়া, মণিপুর বা মেঘালয়, সাম্প্রতিক অতীতে কোনও রাজ্যেই বৃহত্তম দল কংগ্রেসকে সরকার গড়তে ডাকা হয়নি। ভোটের পরে নানা দলকে নিয়ে বিজেপির তৈরি জোটকে সরকার গড়তে ডাকা হয়েছিল। অরুণ জেটলির মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাই যুক্তি দিয়েছিলেন, ভোটের পরে বিধায়করা মিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ জোট তৈরি করলে, তার নেতাকে সরকার গড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানোই রাজ্যপালের দিক থেকে সঠিক সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন:
কর্নাটকে ত্রিশঙ্কু নাটক
বন্ধ হল বাজনা, উধাও লাড্ডুও
গণনা চলাকালীনই কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘গোয়া-মণিপুর-মেঘালয়ের ধারা মেনেই কংগ্রেস-জেডি(এস) জোটকে সরকার গড়তে ডাকা হোক। সে জোট ভোটের পরে তৈরি হলেও। কারণ জেতা ও এগিয়ে থাকা আসন মিলিয়ে তারা যাদুসংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে। এই জোটের পক্ষে ৫৬% ভোট পড়েছে।’’ বিজেপির আইনজীবী নেতা নলিন কোহলির দাবি, ‘‘প্রাক-নির্বাচনী জোট অগ্রাধিকার পায়। নির্বাচন পরবর্তী জোট তখনই প্রাধান্য পায়, যখন সংখ্যার বিষয়ে স্পষ্টতা থাকে।’’
সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপের যুক্তি, একক বৃহত্তম দল না সংখ্যাগরিষ্ঠ জোট, কাকে ডাকা হবে, তা পুরোপুরি রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত। এই কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস আর বোম্মাইয়ের মামলাতেই সুপ্রিম কোর্টের রায় ছিল, প্রথমে প্রাক-নির্বাচনী জোট, তার পরে ভোট-পরবর্তী জোট প্রাধান্য পাবে। শেষে একক বৃহত্তম দল। গোয়ায় অবশ্য কংগ্রেসকে সরকার গড়তে না দেওয়ার বিরুদ্ধে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, একক বৃহত্তম দলকে প্রথমে ডাকার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভের মত, ‘‘যিনি স্থায়ী সরকার গড়তে পারবেন বলে মনে করবেন, তাঁকেই ডাকা উচিত রাজ্যপালের। নৈতিকতার প্রশ্নটি রাজ্যপালের দেখার বিষয় নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy