অটল: নিউ টাউনে বিচারপতি কারনান। ছবি: শৌভিক দে।
সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের রাস্তায় অটলই রইলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান।
একেই তো এক সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সব চেয়ে সিনিয়র ছ’জন বিচারপতির কাছে ১৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ‘নির্দেশ’ জারি করেছেন তিনি। তার উপরে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের জারি করা নির্দেশও শুক্রবার সরাসরি অগ্রাহ্য করলেন বিচারপতি কারনান। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল এ দিন গ্রেফতারি পরোয়ানা ধরানোর জন্য তাঁর নিউ টাউনের বাড়িতে গেলে প্রাপ্তি স্বীকার হিসেবে কারনান তাতে সই করেন ঠিকই। কিন্তু পত্রপাঠ সেটি খারিজও করে দেন।
নিজের বদলি-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে টানাপড়েন চলছে বিচারপতি কারনানের। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, শীর্ষ আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির রাস্তা নেয়। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ধরাতে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এবং বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহ শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ নিউ টাউনের একটি আবাসনে তাঁর ফ্ল্যাটে যান। ৩১ মার্চের মধ্যে কারনানকে সর্বোচ্চ আদালতে হাজির করানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্রেফতারি পরোয়ানা নিলেন না কারনান, দরজা থেকে ফিরল পুলিশ
পুলিশ জানাচ্ছে, বিচারপতি কারনান স্বাক্ষর করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রাপ্তি স্বীকার করেন। কিন্তু সেই সঙ্গেই জানিয়ে দেন, ওই নির্দেশিকা তিনি খারিজ করে দিচ্ছেন। কেন খারিজ করছেন, তার ব্যাখ্যা হিসেবে বিচারপতি কারনান জানান, সাংবিধানিক পদে আসীন কোনও ব্যক্তিকে এই ভাবে গ্রেফতার করা যায় না। অগত্যা কারনানকে দেওয়া শীর্ষ আদালতের চিঠি সই করিয়ে সেটি ফেরত নিয়ে চলে আসেন ডিজি। তাঁর অফিস থেকে ওই চিঠি হাইকোর্ট মারফত সর্বোচ্চ আদালতে পাঠানো হবে পুলিশি সূত্রের খবর।
সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চই আদালত অবমাননার অভিযোগে বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে কারনান বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি পাল্টা নির্দেশ জারি করে ওই বেঞ্চকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন এবং ১৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ওই সাত বিচারপতি তাঁর বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক কাজ করতে তাঁকে বাধা দিয়েছেন, তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় জটিলতার সৃষ্টি করছেন, তাঁর মানসিক সমস্যা তৈরি করেছেন এবং সাধারণ মানুষের কাছে তাঁকে হেয় করেছেন। সাত দিনের মধ্যে ওই ক্ষতিপূরণ না-দিলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ ওই সাত বিচারপতির বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকবে না বলেও মন্তব্য করেছেন কারনান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy