কেন্দ্রীয় প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী সত্যপাল সিংহ। ছবি সৌজন্য: ইউটিউব।
মানুষ নাকি বিবর্তনের মাধ্যমে আসেনি! শুধু তাই নয়, চার্লস ডারউইনের তত্ত্বও নাকি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ভুল!
না, কোনও জার্নালে এ কথা প্রকাশিত হয়নি। কোনও বিজ্ঞানীও এ কথা দাবি করেননি। এই দাবি যিনি করলেন তিনি আর কেউ নন, কেন্দ্রের প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী সত্যপাল সিংহ। মহারাষ্ট্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনই দাবি করে বসলেন তিনি।
এখানেই থেমে থাকেননি সত্যপাল। তিনি জানান, স্কুল-কলেজের পাঠ্যবিষয় থেকে এখনই সরিয়ে দেওয়া উচিত ওই তথ্য।
আরও পড়ুন: ঠিক দিশাতেই চলছে সরকার, দাবি মোদীর
মন্ত্রী ঠিক কী বলেছিলেন?
তিনি বলেন, “মানুষের বিবর্তন নিয়ে ডারউইনের তথ্য ভুল। বানর থেকে নয়, মানুষ প্রথম থেকেই পৃথিবীতে মানুষ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল!” সত্যপালের আরও দাবি, “আমাদের পূর্বপুরুষরা কখনও বলেননি বা লিখে যাননি যে বানর থেকে মানুষে পরিবর্তন হতে দেখেছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, কোনও বই বা আমাদের ঠাকুরদাদের মুখে শোনা গল্পেও এমন কোনও কথার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।”
মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে ঘিরেই নানা মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ডারউইনের তত্ত্ব বলে, বিবর্তনের পথ ধরেই বানর থেকে মানুষ এসেছে। অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, যে মানুষটির বিবর্তনবাদ প্রমাণিত, সারা বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত, গৃহীত, সেই ডারউইনের তত্ত্বকেই কোন যুক্তিতে অবলীলায় নস্যাত্ করলেন মন্ত্রী! এই প্রথম নয়, পুলিশ কমিশনার পদে থাকাকালীন মুম্বইয়ে এক চিত্র সাংবাদিকের গণধর্ষণের ঘটনায় বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুন: পার্কিং নিয়ে ঝামেলা, পাথর, রড দিয়ে পিটিয়ে খুন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী
প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েও অবশ্য নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি সত্যপাল। উল্টে এনডিটিভি-র কাছে দাবি করেছেন, “কোনও ভিত্তি ছাড়া মন্তব্য করি না। আমি বিজ্ঞানের মানুষ। আর্টস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসিনি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করেছি।”
বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স-এর ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশোনারি সায়েন্সেস-এর অধ্যাপক বিজ্ঞানী রাঘবেন্দ্র গাড়াগকর মন্ত্রীর ডারউইন তত্ত্ব প্রসঙ্গে এনডিটিভি-কে বলেন, “বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের রাজনৈতিক মেরুকরণ করার চেষ্টা চলছে।”
পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর সত্যপাল। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম ফিল-ও করেছেন। অস্ট্রেলিয়া থেকে এমবিএ, নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জন প্রশাসনে স্নাতকোত্তর এবং নকশালবাদের উপর পিএইচডি-ও করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy