পশ্চিমবঙ্গের সীমানা ছাড়িয়ে বহির্বঙ্গেও সারদা-কাঁটা বিঁধছে তৃণমূলকে।
ঝাড়খণ্ডে আসন্ন বিধানসভা ভোটে লড়তে চায় তৃণমূল। ডিসেম্বরে সম্ভাব্য ওই নির্বাচনে সাঁওতাল পরগনার তিনটি আসন-সহ রাজ্যের দশটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন দলের প্রদেশ সভাপতি বন্ধু তিরকি। কিন্তু ভোটের প্রস্তুতি পর্বেই পশ্চিমবঙ্গে সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছেন রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্ব।
সারদা বা রোজভ্যালি ঝাড়খণ্ডের অনেক এলাকা থেকে দেদার টাকা তুলেছিল ওই ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি। রাজধানী রাঁচি ছাড়া সাঁওতাল পরগনার পাকুড়, দুমকা, রাজমহলে ছিল সারদার একাধিক শাখা অফিস। ঘাটশিলা, বহরাগোড়ার মতো পশ্চিমবঙ্গের সীমানা লাগোয়া জায়গা থেকেও টাকা তুলে বেপাত্তা সংস্থার এজেন্টরা। সেখানে ক্ষোভ তুঙ্গে।
ভোটারদের মন বুঝতে ওই সব এলাকায় গিয়ে তাই সারদা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছেন তৃণমূল নেতারা। দলের আহ্বায়ক দিলীপ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করছেন, “এ সব বিরোধী শিবিরের চক্রান্ত। ঝাড়খণ্ডের প্রায় প্রতিটি দলে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি দেখে তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে বিরোধীরা।”
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ‘দুর্গ’ সাঁওতাল পরগনায় তৃণমূলকে সারদা-অস্ত্রেই আঘাত করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে জেএমএম। দলের মহাসচিব সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের মোকাবিলা করতে সারদার কথা তো উঠবেই।”
এ রাজ্যে তৃণমূল এখনও পর্যন্ত যত বার ভোটে লড়েছে, সব সময়ই দলের ভরাডুবি হয়েছে। সে দিকে তাকিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ ঝাড়খণ্ডের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। তবে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও ভাবে বাবুলাল মরান্ডির ‘ঝাড়খন্ড বিকাশ মোর্চা’ (জেভিএম) সমঝোতা করলে ছবিটা বদলে যেতে পারে। লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বাবুলালকে কাছে টানতে আগ্রহী তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়াইয়ের জন্য তৃণমূলের তরফ থেকে ফের বাবুলালের কাছে প্রস্তাব গিয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের নাম সারদা বিতর্ক জড়িয়ে যাওয়ায় বাবুলাল এ ক্ষেত্রে সতর্ক ভাবে এগোতে চাইছেন।
জেভিএমের কয়েক জন নেতার বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের কোনও গুরুত্ব নেই। তৃণমূলের সঙ্গে জেভিএম জোট বাঁধলে বিরোধীরা সারদা-কাণ্ড নিয়ে সরব হবে। তাতে ভোটের ময়দানে দল সমস্যায় পড়তে পারে। পোড়াইয়াহাটের জেভিএম বিধায়ক প্রদীপ যাদবের কথায় এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেছেন, “বাবুলালজির সততা নিয়ে কেউ কখনও প্রশ্ন তুলতে পারেনি। আমরা অসাম্প্রদায়িক শক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতার ভাবমূর্তি সবার আগে।”
সারদা কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরতের দাবিতে সাঁওতাল পরগনায় আন্দোলন হয়েছে। পাকুড়ের এক আন্দোলনকারী প্রবাল পাণ্ডে বলছেন, “সারদা গোষ্ঠী দু’বছর এ রাজ্যে ব্যাপক ব্যবসা করেছে। স্থানীয় মানুষ তৃণমূলকে দু’ভাবে চেনে। সংখ্যালঘুদের বন্ধু আর ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার আশ্রয়দাতা হিসেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy