তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি যখন বাধ্য হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন, প্রাক্তন জাতীয় পর্যায়ের ফুটবলার, বিএসএফ কর্মী তথা সাংবাদিক এন বীরেন সিংহ যখন প্রহর গুণছেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার, তখনই অনশন ভাঙা ও কারামুক্তির পরের প্রথম জন্মদিনটা প্রিয় মাতৃভূমি থেকে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরে, একান্তে কাটাতে চলে গেলেন ইরম শর্মিলা চানু।
নতুন সরকার গড়ার জন্য আজ বিকেলে বিজেপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানান রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা। আগামীকাল বেলা ১টায় শপথ গ্রহণ। মুখ্যমন্ত্রীকে ২২ বা ২৩ মার্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলবেন বলে জানান রাজ্যপাল। কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও রাজ্যপাল বিজেপিকে সরকার গড়তে ডাকায় আইনের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছে কংগ্রেস।
নাজমা হেপতুল্লা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "আমার ৩৭ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও রায় দিয়েছে, রাজ্যের জন্য যা ভাল- সেই সিদ্ধান্ত নেওয়াই রাজ্যপালের দায়িত্ব। কংগ্রেসের চেয়ে বিজেপি জোটের স্থায়ীত্ব ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা-দুইই বেশি ছিল। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য যারা স্থায়ী সরকার চালাতে পারবে তাদের ডেকেছি।" কংগ্রেসের তোলা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নিয়ে নাজমা বলেন, "কংগ্রেসের হয়ে ১৭ বছর রাজ্যসভায় ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলাম। কংগ্রেস বিরোধী পাঁচ সরকারের সঙ্গে কাজ করেছি। কেউ আমার সততা বা নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। মণিপুরের জন্য যা ভাল সেটাই করেছি। দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকা পালন করা উচিত কংগ্রেসের।"
এ দিকে সরকার গড়ার ডাক পেলেও আগামীকাল শুধুমাত্র বীরেন ও তাঁর সঙ্গে বিশ্বজিৎ সিংহ শপথ নেবেন। কারণ মন্ত্রিসভা ঠিক করা নিয়ে শরিকদের মধ্যে দর কষাকষি চরমে। কংগ্রেসের দিকে না যাওয়ার শর্ত হিসেবে এনপিপির দাবি- চার বিধায়ককেই মন্ত্রী করতে হবে। এনপিএফও তাই চায়। শেষ পর্যন্ত 'ড্যান' ও এনডিএ জোটের পুরনো বন্ধুকে 'ম্যানেজ' করেছে বিজেপি। একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী ও বাকি তিনজনকে প্রতিমন্ত্রীর সমপর্যায়ের পরিষদীয় সচিবের পদ দেওয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে খবর, ২১টি আসন পেলেও শরিকদের হাতে রাখতে বিজেপির পাঁচ জনের বেশি মন্ত্রী হতে পারছেন না। ১২ জনের মন্ত্রিসভায় লোক জনশক্তি পার্টির বিধায়ক মন্ত্রী হচ্ছেন। দ্বাদশ মন্ত্রী হতে পারেন নির্দল বিধায়ক আসাব উদ্দিন বা তৃণমূলের টি রবীন্দ্র। তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদিও দাবি করছে, বিজেপিকে সমর্থন করতে নিষেধ করা হয়েছে রবীন্দ্রকে। কিন্তু রবীন্দ্র সে নিষেধে কান দিচ্ছেন না। বিজেপির নজরদারিতে থাকা রবীন্দ্র ও নির্দল বিধায়কের মোবাইলে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না।
এ সব জটিলতা থেকে অনেক দূরে ৪৫ তম জন্মদিনের সকালে কেরলে পা রাখেন শর্মিলা। পালাক্কাডের কাছে আত্তাপাদি আদিবাসী গ্রামে এক মাস কাটিয়ে ফিরবেন তিনি। শর্মিলা বলেন, "আমার দেহ-মনের বিশ্রাম দরকার ছিল। মণিপুরে কংগ্রেস-বিজেপি সব একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বিজেপি খোলাখুলি ধনবল ও পেশিবল ব্যবহার করছে। আপাতত সব ভুলে শান্তি ফিরে পেতে এসেছি।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy