শিনা বরা হত্যা মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই। মঙ্গলবার আদালতে চার্জ পেশ হল। আর তার পরেই নাটকীয় ভাবে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের ঘোষণা, তাঁর তিন নম্বর স্বামী অর্থাৎ এই মামলার সহ-অভিযুক্ত পিটার মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকেও বিবাহবিচ্ছেদ চান তিনি।
বিশেষ সিবিআই আদালতে ইন্দ্রাণী, পিটার এবং ইন্দ্রাণীর আগের স্বামী সঞ্জীব খন্নার বিরুদ্ধে আজ খুন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পেশ করা হয়েছে। তার পরেই বিচারকের কাছে ইন্দ্রাণী বলেন, তিনি পিটারের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদে ইচ্ছুক। বিচারক তাঁকে জানান, এটা তাঁদের পারস্পরিক ব্যাপার, এর মধ্যে আদালতের কিছু করার নেই।
ইন্দ্রাণীর প্রথম বিয়ে অসমে সিদ্ধার্থ দাস নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনিই শিনা ও মিখাইল বরার জন্মদাতা। তার পরে কলকাতায় ব্যবসায়ী সঞ্জীব খন্নাকে বিয়ে করেন ইন্দ্রাণী। তাঁদের একটি মেয়ে আছে। ২০০২ সালে তৎকালীন মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইন্দ্রাণীর তৃতীয় বিয়ে। মুম্বই চলে আসা। তার পর থেকেই শিনাকে নিজের বোন এবং মিখাইলকে ভাই হিসেবে পরিচয় দিতেন ইন্দ্রাণী। কিন্তু সেখানে গোল বাধায় পিটারের আগের পক্ষের ছেলে রাহুলের সঙ্গে শিনার সম্পর্ক। ইন্দ্রাণী-পিটার কেউই সম্পর্কটা মানেননি। সিবিআইয়ের মতে, রাহুল-শিনার সম্পর্কই এই খুনের মূল কারণ।
আজ সিবিআই বিচারক এইচ এস মহাজনের এজলাসে ইন্দ্রাণী-পিটার-সঞ্জীবের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০(বি) (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ৩৬৪ (অপহরণ), ৩০২ (খুন), ২০৩ (মিথ্যে তথ্য দেওয়া) এবং ২০১ (প্রমাণ লোপাট) ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেকেই আদালতে হাজির ছিলেন। বিচারক প্রত্যেককে কাঠগড়ায় আলাদা আলাদা করে ডেকে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেন। এই মামলার চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি।
শুনানির পরে দুপুরের বিরতিতে ইন্দ্রাণী মৌখিক ভাবে আবেদন করেন, বান্দ্রা শহরতলির পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য অনুমতি দেওয়া
হোক তাঁকে। সেই সঙ্গে সেবামূলক কাজে দান করার জন্য নিজের উইল পাল্টাতে চান বলেও জানান তিনি। সিবিআই বিচারক বলেন, এর জন্য আদালতের অনুমতির প্রয়োজন নেই। তিনিই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল শিনাকে খুন করে তাঁর দেহ পুড়িয়ে পরের দিন মুম্বই থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে রায়গড়ের জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়। সিবিআইয়ের দাবি, এই চক্রান্তে জড়িত ছিলেন ইন্দ্রাণী-পিটার এবং সঞ্জীব। এই খুন এবং তার আগে ষড়যন্ত্রের সব কথা পুলিশ জেনেছিল ইন্দ্রাণীর চালক শ্যামবর রাইয়ের মাধ্যমে। পরে এই মামলায় রাজসাক্ষী হন তিনি।
শুধু শিনা খুন নয়, ইন্দ্রাণী ও সঞ্জীবের বিরুদ্ধে শিনার ভাই মিখাইলকে খুনের চেষ্টা এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে। তাঁকেও যে খুনের ছক কষেছিলেন ইন্দ্রাণী, তা জানিয়েছিলেন মিখাইল। তাঁর দাবি ছিল, শিনাকে খুনের দিনই পানীয়ে ওষুধ মিশিয়ে মিখাইলকেও মারার চক্রান্ত করেছিলেন ইন্দ্রাণী। ২০১৫-র অগস্টে গ্রেফতার করা হয় ইন্দ্রাণীকে। তার পর একে একে সঞ্জীব এবং পিটারও ধরা পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy