ভারতীয় বন্দরে এ বার কি মার্কিন নৌবহর? আমেরিকার নৌসেনার একের পর এক যুদ্ধজাহাজ এ বার নোঙর করবে ভারতের উপকূলে?
তেমনই সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। মোদী-ওবামা সপ্তম বৈঠকের আগে দু’দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেই জল্পনা, আমেরিকার দীর্ঘ দিনের অনুরোধ মেনে নিতে চলেছে ভারত। আন্তর্জাতিক জলপথে টহলদারিতে নিযুক্ত মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলিকে ভারতের বন্দরে নোঙর করে মেরামতি এবং জ্বালানি ভরার অনুমতি দিতে পারে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে বারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল জলভাগে মার্কিন এবং ভারতীয় নৌসেনা পরস্পরের সবচেয়ে বড় বন্ধু হয়ে উঠতে পারে।
বন্ধুত্বের হাত আমেরিকা আগেই বাড়িয়েছে। মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি বি হ্যারিস জুনিয়র সাম্প্রতিক এক দিল্লি সফরে নিজের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সেই দিন আর মোটেই খুব বেশি দূরে নয়, যখন ভারত আর আমেরিকার যুদ্ধজাহাজগুলি একসঙ্গে দাপিয়ে বেড়াবে ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিশাল এলাকায়। সে এক খুব স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত দৃশ্য হয়ে উঠবে।’’ ভারত আর আমেরিকার নৌসেনা এক সঙ্গে কাজ করলে যা যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা কল্পনা করে তিনি ‘আনন্দে উন্মাদ’ (চন্দ্রাহত) হয়ে যাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন অ্যাডমিরাল হ্যারিস।
হ্যারিস যখন এই মন্তব্য করেছিলেন, ভারত সরকার তখনও সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। চিনের দাপট রুখতে ভারতকে অনেক দিন ধরেই নিজেদের পাশে চাইছে আমেরিকা। ভারতীয় বন্দরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের অবাধ যাতায়াত, মেরামতি এবং জ্বালানি ভরার অনুমতিও চাইছে তারা। কিন্তু ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই নিজেদের বন্দরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের অবাধ যাতায়াতের প্রস্তাব নাকচ করে আসছে। আমেরিকার সঙ্গে যৌথ টহলদারিতেও রাজি হচ্ছে না। দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা আগ্রাসন যে রোখা উচিত, তা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ভারত সহমত। সেই কারণে দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনা চারটি যুদ্ধজাহাজও মোতায়েন করে দিয়েছে। কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে যৌথ টহলদারি এখনও শুরু করেনি ভারত। মোদীর এই আমেরিকা সফরে এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ভারতের হয়ে বেনজির লড়াইয়ে আমেরিকা, আজ চিনের সঙ্গে বৈঠকে কেরি
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, যৌথ টহলদারির সিদ্ধান্ত হোক বা না হোক, মোদী-ওবামার বৈঠকে আমেরিকার যুদ্ধজাহাজগুলির জন্য ভারতীয় বন্দরের দরজা খুলে যাবে। অর্থাৎ টিনা আগ্রাসন রুখতে মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ডের জাহাজগুলির যে বিশাল জলপথে টহল দিয়ে বেড়ায়, সেগুলি মাঝপথে বড়সড় সহায়তা পাবে। ভারতের একাধিক বন্দরে আশ্রয় নিতে পারবে, প্রয়োজন হলে মেরামতি করতে পারবে এবং জ্বালানি ভরতে পারবে। ফিলিপিন্সের বন্দরের দরজাও মার্কিন যুদ্ধজাহাজের জন্য খোলা। কিন্তু ভারতের মতো বৃহৎ শক্তির সঙ্গে মার্কিন নৌসেনা এই চুক্তি করতে পারলে, চিনের উপর চাপ আরও বাড়বে। সমগ্র এশিয়ার বিশাল জলভাগে আমেরিকা একা নয়, ভারতের নৌসেনা প্রয়োজন পড়লেই আমেরিকার পাশে দাঁড়িয়ে যাবে— এই বার্তা চারিয়ে দেওয়া যাবে। মোদী-ওবামা বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সে দিকে এখন তাই তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy