অসমের তিনসুকিয়ায় ব্রহ্মপুত্রের উপর এই সেতু তখনও নির্মীয়মান। এই ব্রিজ এখন দেশের দীর্ঘতম সেতু। —ফাইল চিত্র।
ভারতের দীর্ঘতম সেতু। এমনই সেতু, যার উপর দিয়ে ৬০ টন (মোটামুটি ৬০ হাজার কিলোগ্রাম) ওজনের ব্যাটল ট্যাঙ্কও নির্দ্বিধায় চলে যেতে পারে। চিন সীমান্তের কাছে এই বিরাট সেতুর উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রহ্মপুত্রের উপর মাথা তুলে দাঁড়ানো এই সেতুর উদ্বোধন আগামী ২৬ মে। অসমের পূর্বতম প্রান্তে তৈরি হওয়া এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তির উদযাপন শুরু করতে চলেছেন বলে সাউথ ব্লক সূত্রের খবর।
ঢোলা এবং সাদিয়া— ব্রহ্মপুত্রের দুই পাড়ের এই দুই অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে চলেছে এই নতুন সেতু। ২০১১ সালে ইউপিএ জমানায় এই সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। ৯৫০ কোটি টাকা খরচ করে ব্রিজটি তৈরি হয়েছে। ব্রিজটির বিশেষ ধরনের কাঠামোই এই বিপুল খরচের অন্যতম কারণ। যে এলাকায় ব্রিজটি তৈরি হয়েছে, চিন সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত সেই এলাকায় যোগাযোগ পরিকাঠামোর উন্নয়নে ভারত এখন খুব জোর দিচ্ছে। ব্রিজটিকে এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে প্রয়োজন পড়লে ওই ব্রিজের উপর দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশাল ব্যাটল ট্যাঙ্কগুলি দ্রুত চিন সীমান্তের দিকে রওনা দিতে পারে।
অসমের সেতুটি এমন ভাবেই তৈরি হয়েছে, যাতে ৬০ টন ওজনের ব্যাটল ট্যাঙ্কও ব্রিজের উপর দিয়ে গড়গড়িয়ে চলে যাবে। —প্রতীকী ছবি / সংগৃহীত।
এত দিন পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের বান্দা-ওরলি সি-লিঙ্ক ছিল ভারতের দীর্ঘতম সেতু। কিন্তু ২৬ মে অসমের ঢোলা-সাদিয়া ব্রিজ খুলে গেলে, সেটিই দেশের দীর্ঘতম সেতুর মর্যাদা পেতে চলেছে, কারণ এই ব্রিজ ব্রান্দা-ওরলি সি-লিঙ্কের চেয়ে ৩.৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। ঢোলা-সাদিয়া ব্রিজের দৈর্ঘ্য ৯.১৫ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: ভারতের সার্বভৌমত্বের প্রতি চিন শ্রদ্ধাশীল, নাম না করে বার্তা দিল বেজিং
অসমে ব্রহ্মপুত্রের উপর বিপুল ব্যয়ে এই সুবিশাল সেতু তৈরির পিছনে সামরিক কারণও যে রয়েছে, সে কথা অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের কথায় স্পষ্ট। ২৬ মে-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘অসম এবং অরুণাচল প্রদেশ আমাদের দেশের কাছে কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে হেতু সেতুটি চিন সীমান্তের কাছে অবস্থিত, সে হেতু সঙ্ঘাত ঘটলে আমাদের সেনাবাহিনী এবং আর্টিলারির দ্রুত যাতায়াতে এই সেতু খুব সাহায্য করবে।’’ নতুন সেতুটির অবস্থান অসমের রাজধানী দিসপুর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দূরে আর অরুণাচলের রাজধানী ইটানগর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু চিন সীমান্ত থেকে আকাশপথে এর দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার। অতএব কৌশলগত ভাবে এই সেতু ভারতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, তা নিয়ে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের সংশয় নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy