প্রতীকী ছবি।
কূটনৈতিক স্তরে ভারত-পাক আলোচনা প্রস্তুতির প্রক্রিয়াটি চলছেই, তবে নিচু তারে। ভারতে লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর পাক নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেছেন ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া। কথা হয়েছে বেশ কিছু বিষয়ে।
ভোটে পুলওয়ামা-বালাকোট নিয়ে ধুন্ধমার আক্রমণের পরেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শপথে ডাকার অবকাশ ছিল না মোদীর। ডাকেনওনি। আবার ডাকলেও ইমরানের পক্ষে আসাটা সম্ভব হত কি না, তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে। ঘরোয়া রাজনীতির যথেষ্ট চাপ ও বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাঁর উপরেও। শপথে ডাক না-পাওয়া নিয়েও কম খোঁচা খেতে হচ্ছে না তাঁকে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর প্রথম দফার শপথে এসেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তাঁর মেয়ে মরিয়ম আজ প্রকাশ্যেই ইমরানকে ‘পুতুল প্রধানমন্ত্রী’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আদৌ মর্যাদা দেন না তাঁকে। পাক সেনাবাহিনীর নাম না-করে মরিয়ম বলেন, ‘‘মোদী ও বিশ্বের অন্য নেতারা তাঁকে মর্যাদা দেন না। কারণ তাঁরা ভাল করেই জানেন, এই অযোগ্য প্রধানমন্ত্রীকে কারা বসিয়েছে। তিনি কাদের হাতের পুতুল।’’
এই পরিস্থিতিতেও দু’তরফের মধ্যে আগামী দিনে যোগাযোগ তৈরি নিয়ে কথা চলছে কূটনৈতিক স্তরে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ভারতীয় হাইকমিশনার বিসারিয়াকে পাক বিদেশসচিব সোহেল মামুদ জানিয়েছেন, তাঁদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদটি এই মুহূর্তে শূন্য থাকলেও এক সপ্তাহের মধ্যেই সেখানে লোক নিযুক্ত করা হবে। আগামী মাসে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কিরঘিজস্তানে এসসিও সম্মেলনে পার্শ্ববৈঠক হওয়ার কথা। তার পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং পাকিস্তানের নবনিযুক্ত উপদেষ্টা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে যাবেন সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর পর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হবে বলে প্রাথমিক ভাবে স্থির রয়েছে।
তবে যে-হেতু দেশের নাম পাকিস্তান, তাই এই রোডম্যাপটিকে এখনই প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না মোদী সরকার। বরং কিছুটা নিচু তারেই এই যোগাযোগের বিষয়টি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস রোধে পাকিস্তান কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকেও নজর রাখা হবে।
লোকসভার পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশিত হওয়ার আগেই মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছিলেন ইমরান। ভোট শুরু হওয়ার আগেই মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘মোদী ফিরলে তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পক্ষে ভাল। সম্প্রতি নিজে ফোন করে বেশ কিছু ক্ষণ মোদীর সঙ্গে কথাও বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, সন্ত্রাস নিয়েও কথা হয়েছে। এর পরেও শপথে ইমরানকে না ডেকে, আপাতত লাঠি না-ভেঙে সমস্যা সমাধানের কৌশল নিয়েছেন মোদী। তবে এটা স্পষ্ট যে, পুলওয়ামা-বালাকোটের তিক্ততা ক্রমশ মুছে ফেলে আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সামগ্রিক আলোচনা ফের শুরু করার পথে হাঁটতে চলেছেন মোদী ও ইমরান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy