পঞ্জাবে ভারত-পাক সীমান্তে কড়া প্রহরায় বিএসএফ। ছবি: এএফপি
এক দিকে ঘরোয়া ভোটযুদ্ধের মুখে যুদ্ধের পরিবেশ এবং জাতীয়তাবাদের জিগির জাগিয়ে রাখা। অন্য দিকে বিশ্বের সামনে নিজেদের পরিচ্ছন্ন সন্ত্রাস-বিরোধী ভাবমূর্তি বজায় রেখে ইসলামাবাদকে কূটনৈতিক ভাবে একঘরে করা। আপাতত এই কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে মোদী সরকার। তবে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে চুলচেরা হিসাব করে, ভারসাম্য রেখে এগোনো আগামী দিনে অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকছে।
গত কাল এবং আজ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আকাশ যুদ্ধ এবং ভারতীয় উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের পাকিস্তানের হাতে বন্দি হওয়ার পর উত্তেজনা খুবই চড়ে গিয়েছে। পাকিস্তানকে ভারতের ডিমার্শ দেওয়ার ধরনেই স্পষ্ট, সেই উত্তাপ এখনই এক ধাক্কায় কমিয়ে ফেলার রাস্তায় হাঁটা হবে না। কেন না ইতিমধ্যেই পিছনের আসনে চলে গিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোদী সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে তোলা বিরোধীদের প্রচার। গোটা দেশের সংলাপ এখন কেন্দ্রীভূত হয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’-কে ঘিরেই। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ঘরোয়া রাজনীতিতে যে সব ঘাটতিগুলি নিয়ে বেদম অস্বস্তিতে পড়েছিলেন মোদী-অমিত শাহেরা, সেগুলি শুধু চাপা পড়ে যাচ্ছেই নয়, দেশের গোটা আবেগকে পাকিস্তান-বিরোধিতার এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে পেরেছে সরকার। মনে করা হচ্ছে, এই আবেগ আরও কিছু দিন মোদীর সঙ্গে থাকলে, ভোটের বাক্সে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য।
কিন্তু এ’টি কূটনীতি নয়। এমন একটি বিষয়, যেখানে খেলা নিজেদের হাতে থাকে না। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এই ধরনের পরিস্থিতিতে একাধিক বার একটি কথা বলতেন। তা হল, ঘটনার নিজস্ব গতি রয়েছে। সেই গতি এক বার শুরু হয়ে গেলে আর থামানো সম্ভব হয় না। বিষয়টি অনেকটা বাঘের পিঠে চড়ার মত। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, দেশটির নাম পাকিস্তান। ফলে ইমরান খান আজ শুভবুদ্ধি উদয়ের কথা বলেছেন ঠিকই, কিন্তু দেশের সেনা এবং আইএসআই-এর হাতের পুতুল তিনি। ফলে আগামী কালই যে অন্য রূপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে দেখা যাবে না, তার কী নিশ্চয়তা রয়েছে ?
আপাতত এই যুদ্ধকে ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে’— এ ভাবেই দেখতে এবং দেখাতে চাইছে কেন্দ্র। রাশিয়া এবং চিনের সঙ্গেও এই মর্মেই কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। গোটা বিশ্বকে পাশে নিয়ে পাকিস্তানকে একঘরে করার সমান্তরাল চেষ্টাও কিন্তু একই ভাবে হচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব তাদের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো তৈরি নিয়ে যে ভাবে মিথ্যাচার করে চলেছে তা ন্যক্কারজনক।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy