—ফাইল চিত্র।
চরের বদলে কি পাল্টা চর!
ভারতের প্রাক্তন নৌসেনা কুলভূষণ যাদব তখন পাকিস্তান জেলে। গত এপ্রিল মাসে হঠাৎই নেপালের লুম্বিনি এয়ারপোর্টে নামার পরে নিখোঁজ হয়ে যান পাক সেনার প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তথা পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রাক্তন চর মহম্মদ হাবিব জাহির। হাবিবকে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’— এই দাবিতে সরব হয় ইসলামাবাদ। এ বার সরকারি ভাবে ওই সেনা অফিসারের বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছে জানতে চাইল পাকিস্তান।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, কুলভূষণের গ্রেফতারির বদলা নিতেই জাহিরকে তুলে নিয়ে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে র’। সরকারি ভাবে অবশ্য ভারত শুরু থেকেই পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পরে আজ নওয়াজ শরিফের প্রশাসন জানিয়েছে, প্রাণভিক্ষার সব ক’টি আবেদন খারিজ না-হওয়া পর্যন্ত কুলভূষণকে ফাঁসি দেবে না পাকিস্তান।
জাহির পাক সেনার আর্টিলারি বাহিনীর অফিসার ছিলেন। এর পরে বেশ কিছু দিন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হয়েও কাজ করেন তিনি। ২০১৪ সালে পাক সেনা থেকে অবসর নিয়ে স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি নেন। পাক পুলিশের কাছে জাহিরের পরিবার অভিযোগে জানায়, এ বছরের শুরুতে ব্রিটেনের একটি নম্বর থেকে জাহিরের কাছে নেপালে চাকরির প্রস্তাব আসে। নেপালে অবস্থিত রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি দফতরে উচ্চ পদ ও মাসিক সাড়ে আট হাজার ডলার বেতনের আশ্বাস দেওয়া হয় তাঁকে। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে গত এপ্রিলে বাড়ি ছাড়েন তিনি। রাওয়ালপিন্ডি থেকে লাহৌর, তার পর ওমান হয়ে নেপালের কাঠমান্ডু পৌঁছন। সেখান থেকে বুদ্ধ এয়ারের একটি ছোট বিমানে লুম্বিনি পৌঁছন হাবিব। লুম্বিনি বিমানবন্দরে যে তিনি পৌঁছেছেন, সেই ছবিও বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন হাবিব। পরিবারের অভিযোগ, তার পর থেকেই খোঁজ নেই তাঁর। স্থানীয় যে ফোন নম্বরের মাধ্যমে তিনি বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন সেই নম্বরটিও এখন কাজ করছে না বলে অভিযোগ পরিবারের। যদিও হাবিবের বিরুদ্ধে এ-ও অভিযোগ উঠেছে যে, আইএসআইয়ের হয়ে ভারত-বিরোধী কাজ করতেই লুম্বিনি এসেছিলেন তিনি। চাকরি পাওয়ার গল্পটি ঠিক নয়।
আরও পড়ুন: সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে দিল্লির পাশেই মস্কো
শুরু থেকেই পাক সংবাদমাধ্যম দাবি করে আসছিল, লুম্বিনিতে কাজের ফাঁদ পেতে টেনে এনে আসলে হাবিবকে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে র’। লক্ষ্য, হাবিবের পরিবর্তে কুলভূষণের প্রত্যপর্ণ। শুরুতে পাক বিদেশ মন্ত্রক নেপালের মাধ্যমে খোঁজখবর করলেও, এ বার সরাসরি ভারতের কাছে চিঠি লিখে হাবিরের বিষয়ে দিল্লির কাছে কোনও তথ্য রয়েছে কি না, জানতে চেয়েছে। যদিও শুরু থেকেই হাবিবের বিষয়ে ভারত কিছু জানে না এই অবস্থানই বজায় রেখেছে সাউথ ব্লক।
হাবিব বিতর্কের মধ্যেই কুলভূষণ প্রসঙ্গে আজ পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বলেন, ‘‘যাদব প্রাণভিক্ষার জন্য প্রথমে সেনাপ্রধান ও পরে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানাতে পারেন। প্রাণভিক্ষার সমস্ত আবেদন খারিজ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হবে না।’’ তবে তাঁর দাবি, ‘‘ভারত কোনও ভাবেই যাদবকে আইনি সাহায্য দিতে পারবে না। বিষয়টি আইনজীবী কুরেশি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতকে জানিয়ে দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy