প্রার্থনা-অনুরোধ-ভিক্ষার দিন শেষ। এ বার ভারত নিজের অধিকারের জোরেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ পেতে চায়। শনিবার রাতে প্যারিসে প্রবাসী ভারতীয়দের এক সভায় এমন কথাই বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি মনে করিয়ে দিলেন, বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে ভারতের ভূমিকা ইতিহাস অস্বীকার করতে পারে না। এমনকী বর্তমানেও সে ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছে এই দেশ। ‘‘আশা করব, রাষ্ট্রপুঞ্জ যখন এ বছর তার ৭০ তম বর্ষপূর্তি পালন করবে, তখন এটা নিয়ে ভাববে’’, বলেন মোদী।
বেশ কিছু দিন ধরেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা করছে ভারত। নয়াদিল্লির যুক্তি, এখন যারা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য, তারা বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতির ছবির সবটা তুলে ধরতে পারে না। বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতও গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আজ নয়, অতীত থেকেই। বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বোঝাতে গত কাল সকালে ফ্রান্সে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাদের স্মৃতিতে তৈরি এক সৌধ পরিদর্শনে যান মোদী। পরে বলেন, ‘‘গোটা দুনিয়াকে জানাতে চাই, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ১৪ লক্ষ ভারতীয় সেনা নিজেদের জীবন বিপন্ন করেছিলেন...কীসের জন্য লড়েছিলেন তাঁরা? ভারত বা তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য তো নয়।...অন্য কারও জন্য।’’ এ-ও মনে করিয়ে দেন, ভারতের ইতিহাস কখনও কোনও আগ্রাসনকে মদত দেয়নি। ‘‘নিজের অধিকারের জন্য অনেকেই লড়েন, কিন্তু অন্যের জন্য প্রাণ দেওয়াটা আলাদা’’, মত মোদীর।
পাশাপাশি মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী ও গৌতম বুদ্ধের উদাহরণও দেন তিনি। তিন হাজার প্রবাসী ভারতীয়ের সামনে প্রত্যয়ী কণ্ঠে বলেন, ‘‘গাঁধীজি ও বুদ্ধের মতো উন্নত নৈতিক ভাবনাচিন্তার জন্ম দিয়েছে এমন কোনও দেশ আর নেই।’’ তবে শান্তির ঐতিহ্য থাকলেও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পেতে কেন এখনও ভারতকে কাকুতি মিনতি করতে হয়, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এ-ও জানিয়ে দেন, এর পর থেকে আর আর্জি-অনুরোধ করবে না ভারত। বরং নিজের অধিকার চাইবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy