এক দিন মানসী মজাচ্ছলে সুশীলকে বলেন, ‘‘তুমি তো মেয়েদের মতো আমার এত খেয়াল রাখছ। তুমি সত্যিই এক জন মেয়ে হয়ে গেলে কেমন হয়! আমার মনে হয় তুমি লিঙ্গ পরিবর্তন করে ফেল। দেখ তো এ রকম করলে কী রকম অনুভব হয়?’’
প্রতীকী ছবি।
সব সময় স্ত্রীর খেয়াল রাখতেন সুশীল (নাম পরিবর্তিত)। স্ত্রী কী খাবেন, কখন অফিস থেকে আসবেন, অফিসে টিফিন কী নেবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। স্ত্রী মানসীও (নাম পরিবর্তিত) এটা উপভোগ করতেন যে, এক জন মহিলার মতো স্বামী তাঁর সব দিক খেয়াল রাখছেন।
সুশীল-মানসী কলেজের সহপাঠী ছিলেন। ভালবেসে দু’জনে বিয়ে করেন। কর্মসূত্রে দু’জনেই দিল্লিতে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। বেশ ভাল চলছিল দু’জনের সংসার। কিন্তু মজাচ্ছলে নেওয়া একটা সিদ্ধান্তই স্বামী-স্ত্রীর জীবনে ঝড় বয়ে এনেছে।
অফিসে এক মহিলা কর্মীর সঙ্গে সুশীলের আলাপ হয়। এক দিন হঠাৎ তিনি জানতে পারেন ওই মহিলা সহকর্মী আগে এক জন পুরুষ ছিলেন। লিঙ্গ বদলে মহিলা হয়েছেন। খুব অবাক হয়ে যান সুশীল। যে সহকর্মীকে এত দিন মহিলা বলে জানতেন, আদতে তিনি পুরুষ ছিলেন! বাড়িতে ফিরে ওই সহকর্মীর ঘটনা মানসীকে জানান সুশীল। এর পর সুশীল ওই সহকর্মীকে বাড়িতেও নিয়ে আসেন। তাঁদের তিন জনের মধ্যে ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এক দিন মানসী মজাচ্ছলে সুশীলকে বলেন, ‘‘তুমি তো মেয়েদের মতো আমার এত খেয়াল রাখছ। তুমি সত্যিই এক জন মেয়ে হয়ে গেলে কেমন হয়! আমার মনে হয় তুমি লিঙ্গ পরিবর্তন করে ফেল। দেখ তো এ রকম করলে কী রকম অনুভব হয়?’’
মজাচ্ছলে স্ত্রীর এই কথাই পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সুশীল। লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নেন। সুশীলকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মানসী। কোনও কাউন্সেলিং ছাড়াই চিকিৎসক সুশীলের লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এক বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এই বিষয়টি স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই উপভোগ করছিলেন। কিন্তু এর পরিণতি যে চরম হতে পারে তা দু’জনের কেউই তত গুরুত্ব দেননি। যত সময় যাচ্ছিল সুশীলের দেহে নানা রকম পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এই ঘটনা যখন ঘটছে, সুশীলকে নিজের পোশাক পরিয়ে বাজার, দোকানে নিয়ে যাওয়া শুরু করেন মানসী। পরিচিতদের কাছে সুশীলকে নিজের বান্ধবী বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে ওই মহিলাই সুশীল।
ভোপালে থাকা সুশীল এবং মানসীর পরিবার দু’জনকেই বাড়িতে আসতে বলতেন। কিন্তু কোনও না কোনও বাহানা দিয়ে তাঁরা বিষয়টি কাটিয়ে দিতেন। এ ভাবে দেড় বছর তাঁরা এড়িয়ে যান। এক দিন হঠাৎ সুশীলের বাবা-মা দিল্লিতে তাঁদের বাড়ি এসে হাজির হন। সুশীলের এমন রূপ দেখে মা-বাবার জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হয়। কী ভাবে তাঁদের ছেলে এমন হয়ে গেল, কেনই বা হল তার কোনও সদুত্তর পাননি। তাঁরা এই ঘটনার জন্য পুত্রবধূ মানসীকে দায়ী করেন।
মানসীকে শ্বশুর-শাশুড়ির অভিযোগে রাগ করে বাপেরবাড়ি চলে যান। এবং পাল্টা দাবি করেন, স্বামীর দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা নেই সুশীলের। অতএব সুশীলের সঙ্গে সংসার করতে চান না। তিনি বিবাহবিচ্ছেদ চান। বিষয়টি নিয়ে সুশীলের বাবা-মা মামলা দায়ের করেছেন। অদ্ভুত এই মামলা নিয়ে জোর চর্চা চলছে ভোপালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy