খুব অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়েছে কিসবু। তার পর থেকে তার মা কাঞ্চন বেলুন বিক্রি করে সংসার চালানো শুরু করেন। মাকে সাহায্য করার জন্য নিজেও বেলুন বিক্রি করা শুরু করে কিসবু।
কুন্নুরের মেলায় কিসবু (বাঁ দিকে)। মেকওভারের পর (ডান দিকে)। ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
নেটমাধ্যমের ক্ষমতা এতটাই যে অতি সাধার মানুষকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দিয়েছে এমন ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। তা সে পশ্চিবঙ্গের বীরভূমের প্রত্যন্ত এলাকার ভুবন বাদ্যকর হোক বা কেরলের দিনমজুর ষাট বছরের মাম্মিকা বা ছত্তীসগঢ়ের ‘বচপন কা প্যার’ খ্যাত কিশোর সহদেব ডিরডো! নেটমাধ্যমের দৌলতেই এখন তাঁরা ‘সেলিব্রিটি’।
সম্প্রতি এই তালিকায় জুড়েছে অতি দরিদ্র পরিবারের কিশোরী কিসবু মোলের নাম। আজ সেও ভুবন-সহদেবদের মতো ‘ইন্টারনেট সেনসেশন’।
ভাগ্য কখন, কোথায় এবং কী ভাবে সদয় হয় কেউ বলতে পারে না। অতি সাধারণ জিনিসেও অনেকে যে ‘সোনা’ খুঁজে বার করার চেষ্টা করেন তারও নিদর্শন এই ভুবন-কিসবুরা।
খুব অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়েছে কিসবু। তার পর থেকে তার মা কাঞ্চন বেলুন বিক্রি করে সংসার চালানো শুরু করেন। মাকে সাহায্য করার জন্য নিজেও বেলুন বিক্রি করা শুরু করে কিসবু। বিভিন্ন পাড়া এবং মেলায় ঘুরে মায়ের সঙ্গে বেলুন বিক্রি করে সে। তেমনই কেরলের কুন্নুরে একটি মেলায় গিয়েছিল কিসবু। ওই মেলাতেই ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছিলেন এক ফোটোগ্রাফার। তখনই তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়ে কিসবু। ভাইরাল হওয়া পাকিস্তানি কিশোরী যে তার অদ্ভুত চাহনি এবং হাসিতে নেটাগরিকদের মন জয় করেছে, কুন্নুরের মেলায় আসা ফোটোগ্রাফারও কিসবু-র চাহনি একটা সৌন্দর্য খুঁজে পেয়েছিলেন। তার পরই কিসবুর মায়ের কাছে ওই ফোটোগ্রাফার যান এবং তাঁর অনুমতি নিয়ে তার একটা ছবি ক্যামেরাবন্দি করে ফেলেন। নেটমাধ্যমে সেই ছবি শেয়ার করতেই ব্যাপক ভাইরাল হয়।
আর এখান থেকেই কিসবুর জীবনের মোড় নেওয়ার কাহিনি শুরু। ‘সুন্দীর বেলুন বিক্রেতা’ এই নামে নেটমাধ্যমে কিসবুর ছবি নিয়ে যখন বিপুল চর্চা চলছে তার ‘মেকওভার’-এর জন্য এগিয়ে আসে কুন্নুরেরই একটি বিউটি পার্লার। খোঁজ নিয়ে কিসবু ও তাঁর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিউটি পার্লারের মালিক। কিসবুর ‘মেকওভার’-এর ব্যবস্থা করেন। এবং এক জন পেশাদার ফোটোগ্রাফার এনে তার ছবি তোলান। সেই ‘মেকওভার’-এর ছবিই এখন নেটাগরিকদের মন কাড়ছে। রাতারাতি এক বেলুন বিক্রেতা কিশোরী এখন তারকা।
কিসবুর পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনসাধারণের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তার মা। কিসবুর আরও ভাল ভবিষ্যতের জন্য সাহায্য চেয়েছেন তিনি। কাঞ্চন বলেন, “মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করতে চাই। ও যেন স্বনির্ভর হতে পারে। ভবিষ্যতে ওকে যেন বেলুন বিক্রির জীবন বেছে নিতে না হয়। এটাই আমার প্রার্থনা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy