বুধবার সকাল ১১.৩০ হবে। সবে জাগছে দিল্লি শহর। তবে অফিসযাত্রীদের ভিড় রাস্তায় নেহাত কম নয়। অন্য দিনের মতো এ দিনও স্ত্রীকে গাড়িতে চাপিয়ে কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে বেরিয়েছিলেন বছর ষাটের মুকেশ মঙ্গা। কিন্তু বচসার জেরে শেষে গাড়ির ভেতরেই স্ত্রী মঞ্জু মঙ্গাকে (৫৮) ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করলেন তিনি। ঘটনার পর পালাতে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়েন মুকেশ।
যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেই দক্ষিণ দিল্লির অভিজাত আনন্দ নিকেতন এলাকা আপাতত থমথমে। এখানেই একটি বুটিকে কাজ করতেন মঞ্জু। থাকতেন খানিক দূরে হরিনগর এলাকায়। ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু এ দিন কী এমন ঘটল যাতে তিরিশ বছর এক সঙ্গে কাটানোর পরেও স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করলেন মুকেশ? পুলিশ জানিয়েছে, তিরিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে মঙ্গা দম্পতির মধ্যে লড়াই-ঝগড়া লেগেই থাকত। মুকেশের তেমন রোজগার ছিল না। বোনের গিটার স্কুলে দেখাশোনার কাজ করতেন তিনি। স্ত্রী মঞ্জুর রোজগারেই সংসার চলত বলেই জানিয়েছে ছেলে-মেয়েরা। প্রতিবেশীরা জানান, মুকেশ প্রচুর মদ্যপান করতেন। এ দিন মদ্যপ অবস্থাতেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলেই মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, কাজের সূত্রে প্রচুর ফোন আসত মঞ্জুদেবীর। মুকেশ তাঁকে এ নিয়ে সন্দেহ করতেন। এ দিনও এমন একটি ফোনেই কথা বলছিলেন মঞ্জুদেবী। এই নিয়ে গাড়ির ভেতরেই বচসা বাধে। মুকেশ হঠাৎই গাড়ির সিটের তলা থেকে বড় ছুরি বার করে কোপাতে শুরু করেন। রক্তাক্ত মঞ্জুদেবী সংজ্ঞা হারিয়ে গাড়ির ভেতরেই লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাটি লক্ষ করেন স্থানীয় এক নিরাপত্তা রক্ষী। মঞ্জুদেবীকে বাঁচাতে গাড়ির কাচ লক্ষ করে পাথর ছুড়লেও তত ক্ষণে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন মুকেশ। নিরাপত্তা রক্ষীর চিৎকারে পুলিশ গাড়িটিকে ধাওয়া করে মুকেশকে পাকড়াও করেছে। রক্তমাখা ছুরিটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কয়েক মাস আগে দিল্লির ব্যস্ত রাস্তায় প্রেমিকাকে কুপিয়ে খুনের দায়ে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রেম-প্রস্তাব নাকচ করায় সম্প্রতি গুরুগ্রামের এক জনবহুল রেলস্টেশনে আর এক যুবতীকে কুপিয়ে খুন করে এক রিক্সাচালক। দু’টি ঘটনাতেই সর্বসমক্ষে কুপিয়ে খুন করলেও বাঁচাতে আসেননি কেউই। তবে এ দিন মঞ্জুদেবীকে বাঁচাতে মানুষ এগিয়ে এলেও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy