সেনার জঙ্গি দমন অভিযান ঘিরে যে ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা ত্রাল, তা উপত্যকার নতুন প্রবণতা। (প্রতীকী ছবি)
দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টার লড়াই শেষে জম্মু-কাশ্মীরের ত্রালে জঙ্গি দমন অভিযান শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে হিজবুল মুজাহিদিন এবং জইশ-ই-মহম্মদের দুই জঙ্গির। স্থানীয়দের মধ্যে আকিব মৌলবি নামে পরিচিত হিজবুল জঙ্গিকে বাঁচাতে শনিবার রাত থেকেই রাস্তায় নেমেছিলেন বহু স্থানীয় বাসিন্দা। বাহিনীর অভিযান ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সে চেষ্টা সফল হয়নি। তবে জঙ্গিদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সেনাবাহিনীর এক মেজর-সহ মোট ছয় নিরাপত্তা কর্মী জখম হয়েছেন।
দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার যে এলাকায় বাহিনী অভিযান চালিয়েছে, সেই ত্রাল গত বছরই শিরোনামে এসেছিল বুরহান ওয়ানির সৌজন্যে। হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ত্রালের বাসিন্দা ছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হওয়ার আগে সে দীর্ঘ দিন ত্রালের জঙ্গলেই আত্মগোপন করে ছিল। ২০১৬-র মাঝামাঝি সে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে আসার পরেই বাহিনীর হাতে নিহত হয়।
পুলওয়ামা জেলার বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গি কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছে সম্প্রতি, বেড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতাও। (প্রতীকী ছবি)
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চলা অভিযানে যে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে, তাদের অন্যতম আকিব ভাট ছিল বুরহানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। হিজবুল জঙ্গি আকিবও ত্রালেরই বাসিন্দা ছিল। এই যুবক এলাকা আকিব মৌলবী নামেই বেশি পরিচিত ছিল। ত্রালের একটি বাড়িতে আকিব ও জইশ জঙ্গি সইফুল্লা ওরফে ওসামা লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর পেয়ে শনিবার বাহিনী বাড়িটি ঘিরে ফেলে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ প্রথম বার দুই জঙ্গির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়। তবে তারা আত্মসমর্পণে রাজি হয়নি। সেই থেকেই শুরু হয় বিক্ষিপ্ত গুলির লড়াই। সকাল ৯টা নাগাদ সেই লড়াই শেষ হয়। পালানো সম্ভব হবে না বুঝতে পেরে রবিবার ভোরে আকিব নিজের বাবাকে ফোন করে এবং বিদায় জানা বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: মৃত বা জীবন্ত বন্দিদের এই গহ্বরে ফেলে দিত আইএস! কত হিসেব নেই
সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, আকিব মৌলবি এবং সইফুল্লাকে পালানোর পথ করে দিতে রাতেই ত্রাল এলাকার বহু মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। পাথর ছুড়ে এবং নানা ভাবে বাহিনীকে আক্রমণ করে তাঁরা অভিযান ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ এবং সিআরপিএফ এই স্থানীয় বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয়। এই গোলমালের মধ্যে দুষ্কৃতীরা এক সিআরপিএফ জওয়ানের কাছ থেকে একটি ইনস্যাস রাইফেল ছিনিয়ে নেয় বলে জানা গিয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কনস্টেবল মঞ্জুর আহমেদ নাইকের মৃত্যু হয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি শহিদ হন বলে বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে। সেনা বাহিনীর মেজর আর রেশি-সহ ৬ নিরাপত্তা কর্মী জখম হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy