Advertisement
E-Paper

পাইনবন থেকে বেরিয়ে এসে হামলার জন্য ভিড়বহুল তিন জায়গা বেছে নেয় পাঁচ জঙ্গি! ১০ মিনিট ধরে চলে হত্যালীলা

মঙ্গলবার সময় তখন দুপুর ১টা ৫০ মিনিট। পর্যটকেরা বুঝতেই পারেননি ‘মৃত্যুদূত’ এসে হাজির হয়েছে। হঠাৎ গুলি চলার আওয়াজ। বাচ্চারা তখন খেলায় ব্যস্ত। অনেকে আবার ভেলপুরি খেতে ব্যস্ত ছিলেন।

পহেলগাঁওয়ে কোথায়, কী ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পহেলগাঁওয়ে কোথায়, কী ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৫০
Share
Save

কেউ তখন সামনের বরফঢাকা পাহাড়, পাইনবনের অপূর্ব দৃশ্যের ছবি তুলতে ব্যস্ত। কেউ আবার ভিডিয়ো রিল করছিলেন। বাচ্চারা খেলায় মত্ত ছিল। পর্যটকদের অনেকে আবার ভিড় করেছিলেন খাবারের দোকানগুলিতে। সেখানে বসে কেউ আবার পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে খোশমেজাজে গল্পে মশগুল ছিলেন। খাবারের দোকানগুলিতে পর্যটকদের ভিড় ছিল বেশ। আবার যে জায়গা থেকে বরফঢাকা পুরো পাহাড়টা দেখা যাচ্ছিল, অনেক পর্যটক আবার ভিড় জমিয়েছিলেন সেখানে। ছবি এবং ভিডিয়ো তুলছিলেন। আবার সবুজে ঢাকা বিশাল প্রান্তরের অন্য এক প্রান্তে যেখানে বাচ্চাদের জন্য খেলার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানেও পর্যটকদের জমায়েত ছিল।

পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় এলে ঘোরাঘুরির পর মূলত এই তিন জায়গাতেই পর্যটকদের ভিড় একটু বেশি হয়। মঙ্গলবারও সেই ছবি দেখা গিয়েছিল। তার মধ্যেও অনেকে ইতিউতি ছড়িয়েছিটিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। চার দিকে পর্যটকদের মধ্যে তখন আনন্দ, মজা আর উচ্ছ্বাসের ছবি। তাঁরা যখন সকলে প্রকৃতির রূপ উপভোগে ব্যস্ত পাইনবনের ভিতর থেকে ‘মৃত্যুদূত’ হয়ে হাজির হয় পাঁচ জঙ্গি। সূত্রের খবর, ঘন পাইনবন থেকে পাঁচ জঙ্গি বেরিয়ে এসে তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়। তারা জানত কোন তিন জায়গায় পর্যটকদের ভিড় বেশি হয়। তাই পাইনবন থেকে বেরিয়ে তিন হামলাস্থলকে বেছে নেয় পাঁচ জঙ্গি।

মঙ্গলবার সময় তখন দুপুর ১টা ৫০ মিনিট। পর্যটকেরা বুঝতেই পারেননি ‘মৃত্যুদূত’ এসে হাজির হয়েছে। হঠাৎ গুলি চলার আওয়াজ। বাচ্চারা তখন খেলায় ব্যস্ত। অনেকে আবার ভেলপুরি খেতে ব্যস্ত ছিলেন। তার মাঝেই মুহুর্মুহু গুলি ছুটে এল পর্যটকদের লক্ষ্য করে। সেই গুলি লেগে কয়েক জন লুটিয়ে পড়লেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তত ক্ষণে পর্যটকেরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। জঙ্গিরা পর্যটকদের কাছে আসে, তাঁদের নাম, ধর্মপরিচয় জিজ্ঞাসা করে। তার পর মাথায় গুলি করে হত্যা করে। হামলা চালিয়েই জঙ্গিরা আবার পাইনবনের যে দিক থেকে এসেছিল, সে দিকে মিলিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ১০ মিনিট ধরে হত্যালীলা চালায় জঙ্গিরা। দুপুর আড়াইটে নাগাদ পুলিশের কাছে খবর যায়। হামলার প্রায় আধ ঘণ্টা পর।

পহেলগাঁও থেকে বৈসরন উপত্যকায় গাড়ি করে যাওয়া যায় না। চড়াই-উতরাই, ছোট ছোট জলধারা এবং জঙ্গল পেরিয়ে ওই বিস্তীর্ণ প্রান্তরে পৌঁছোতে এক ঘণ্টা সময় লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই দাবি করেছেন, যদি সময়মতো সাহায্য পাওয়া যেত, তা হলে হয়তো অনেক পর্যটকই বেঁচে যেতেন। হামলার ঘটনার পর থেকে গোটা দেশ উত্তাল। জঙ্গিদের খোঁজে জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সেনা, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তাবাহিনী।

সংক্ষেপে
  • জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার ঘটনায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের মতে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৮। সূত্রের খবর, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছ’জন।
  • জম্মু-কাশ্মীরে ছুটি কাটাতে গিয়েছিল কর্নাটকের এক পরিবার। মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় মঞ্জুনাথ রাওয়ের। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন স্ত্রী পল্লবী এবং তাঁদের পুত্র। কর্নাটকের শিবমোগ্গার বাসিন্দা পল্লবীর দাবি, অতর্কিত তাঁদের আক্রমণ করে তিন থেকে চার জন। তাঁর স্বামীকে খুন করার পর ওই চার জনের এক জন বলে, ‘‘তোকে মারব না। যা, মোদীকে গিয়ে বল।’’
সর্বশেষ
৭ মিনিট আগে
Pahalgam Attack Tourists

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}